বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাঁদের মাটিতে জল আছে নিশ্চিত করেছে নাসা

চাঁদের মাটিতে যে জল আছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা তা সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছে। পৃথিবী থেকে আমরা চাঁদের যে দিকটা দেখতে পাই তার উপরিতলে (সারফেস) জলের অণুর অস্তিত্ব আছে।

“আমরা আগেই আভাস পেয়েছিলাম যে চাঁদের যে অংশে সূর্যের আলো পড়ে, সেখানে জল থাকতে পারে, তবে এখন আমরা জানি যে হ্যাঁ, চাঁদের মাটিতে সত্যিই জল আছে” বলেন নাসার মহাকাশ পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক পল হার্টজ।

নেচার এ্যাস্ট্রনমি নামে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে এক নিবন্ধে আবিষ্কারটির কথা জানিয়েছে নাসার স্ট্রাটোস্ফেরিক অবজারভেটরি ফর ইনফ্রারেড এ্যাস্ট্রনমি সংক্ষেপে সোফিয়া।

জলের অণুতে দুটি হাইড্রোজেন ও একটি অক্সিজেনের পরমাণু আছে। সোফিয়া বলছে, এর আগেও চন্দ্রপৃষ্ঠে কিছু হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু তা জলের আকারে আছে কিনা তা স্পষ্ট হয়নি। তবে এবার চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে ক্লাভিয়াস নামে একটি জ্বালামুখে জলের অণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ফেলো কেসি হনিবল বলছেন, তাদের উপাত্ত থেকে দেখা যায়, এক ঘনমিটার চাঁদের মাটিতে প্রায় ১২ আউন্সের একটি বোতলের সমান জল আছে।

তুলনা হিসেবে বলা যায়, পৃথিবীতে সাহারা মরুভূমির মাটিতে যতটুকু জল আছে তার পরিমাণও চাঁদের মাটিতে থাকা জলের ১০০ গুণ। তাই বলা যায়, চাঁদের মাটিতে জলের পরিমাণ খুবই কম কিন্তু তা সত্ত্বেও এটি নতুন কিছু প্রশ্ন উঠেছে বিজ্ঞানীদের মনে।

সেগুলো হচ্ছে জল কীভাবে সৃষ্টি হয়? কীভাবে তা চাঁদের বাতাসশূন্য পরিবেশে টিকে থাকতে পারে? এই জলকে কি ভবিষ্যতের মহাকাশচারীদের পক্ষে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হবে? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে আরো গবেষণা দরকার – বলছেন নাসার আরেকজন বিজ্ঞানী জ্যাকব ব্লিচার।

চাঁদের দুই মেরুর যে অংশগুলোতে কখনোই সূর্যের আলো পড়ে না সেখানে জ্বালামুখগুলোতে বরফের অস্তিত্ব আগেই বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছিলেন।

ব্রিটেনের মিল্টন কীন্সের ওপেন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী হানা সার্জেন্ট বিবিসিকে বলেন, সবশেষ আবিষ্কার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে আমরা আগে যা অনুমান করেছিলাম তার চেয়ে চাঁদে আসলে অনেক বেশি জল আছে। ফলে চাঁদের জলকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেল বলে তিনি বলছেন।

কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল হেইন বলছেন, হয়তো চাঁদের মাটিতে শত শত কোটি বরফের মজুত আছে। তাই এ আবিষ্কারের ফলে একসময় বিজ্ঞানীদের কাজের জন্য এগুলো অনুসন্ধানের সম্ভাবনা তৈরি হলো।