পুলিশ লকআপে ১০ দিন ধরে গণধর্ষণের শিকার হলেন মধ্যপ্রদেশের এক যুবতী। বছর কুড়ির ওই যুবতীর অভিযোগ, লকআপে আটকে রেখে পাঁচ পুলিশকর্মী তাঁকে লাগাতার ১০ দিন ধরে গণধর্ষণ করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ওই থানার অফিসার–ইনচার্জও রয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলার মঙ্গাওন থানার ঘটনা। পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে শিবরাজ সিং চৌহানের সরকার। কারণ কয়েকদিন বাদেই মধ্যপ্রদেশে ২৮টি আসনে উপনির্বাচন। তার আগে এই গণধর্ষণের ঘটনা শিবরাজ সিং চৌহানের সরকারকে বেশ চাপে ফেলে দিল।
নির্যাতিতা একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত। বর্তমানে তিনি জেল হেপাজতে রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, গত মে মাসে একটি খুনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর রিবা জেলার মঙ্গাওন পুলিশ লকআপে ছিলেন। তখন ১০ দিন ধরে তাঁকে নিয়মিত গণধর্ষণ করে থানার অফিসার ইনচার্জ–সহ পাঁচ পুলিশকর্মী। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সরব হয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এমনিতেই হাথরাস, বলরামপুর বুলন্দশহরের একের পর এক ধর্ষণের ঘটনার জেরে অস্বস্তিতে রয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন। তার মধ্যে আর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা তোলপাড় করে দিয়েছে।
পুলিশ লকআপে গণধর্ষণের কথা প্রথম প্রকাশ্যে আসে ১০ অক্টোবর। অতিরিক্ত জেলা বিচারক এবং আইনজীবীদের একটি টিম ওইদিন কারাগার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। খুনের মামলায় অভিযুক্ত নির্যাতিতা অতিরিক্ত জেলা জজের সামনে লকআপে গণধর্ষণের ঘটনা সামনে আনেন। এই ঘটনা সামনে আসার পরেই বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক।
এই নির্যাতিতার অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হাজতে আটকে রেখেছিল। তারপর টানা ১০ দিন ধরে পাঁচজন পুলিশকর্মী হাজতে তাঁকে গণধর্ষণ করে। জেলে আটকে রাখায় তিনি কাউকে কিছু জানাতে পারেননি। ফলে বাধ্য হয়ে ওয়ার্ডেনকে এসব কথা জানান। ৯ থেকে ২১ মে পর্যন্ত পাঁচজন পুলিশকর্মী তাঁকে লাগাতার ধর্ষণ করেছিলেন। তারপর থানার সবাই মিলে ওই ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতার সব অভিযোগ মিথ্যে।
বিচার বিভাগীয় তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই জানা যাবে ঘটনার সত্যতা। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্যাতিতার মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়েছে। যদিও রিপোর্ট এখনও আসেনি। বিচার বিভাগীয় তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে।