আগেরদিন ছিল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ছবি। এবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যাকড্রপে কোচবিহার রাজবাড়ির ছবি দেখা গেল। আর সঙ্গে বেজে উঠল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান। এখন কোচবিহারে রয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। চলছে একের পর এক রাজনৈতিক সভা। ঠিক তখনই এই কোচবিহার রাজবাড়ির ছবি পেছনে রেখে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের সুড়সুড়ি দিয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করা হচ্ছে।
দীর্ঘ ৫৫ বছর পর ফের ভারতের হলদিবাড়ি–বাংলাদেশের নীলফামারীর চিলাহাটির মধ্যে রেল পরিষেবা চালু হচ্ছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল বৈঠকের পর এই ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৬৫ সালে ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ওই রেলপথ বন্ধ করা হয়েছিল। আজ থেকেই এই পথে রেল চলাচল শুরু হয়ে গেল।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দুই দেশের বৈঠকে প্রতিনিধিদের পিছনে জাতীয় পতাকার ছবি থাকে। গত সপ্তাহে উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে সেই রেওয়াজ ভেঙেছিলেন মোদী। তাঁর পিছনে ছিল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ছবি। এবার হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কোচবিহার রাজবাড়িকে বেছে নিয়েছেন মোদী। যদিও হাসিনার পিছনে ঐতিহ্য মেনে শুধু ভারত— বাংলাদেশের পতাকা ছিল।
এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত এই পথে মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। ২০২১ সালের মার্চ থেকে এই পথে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। একেবারে বাঙালির বেশে ধুতি–পাঞ্জাবি পরে বৈঠকে হাজির ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। একইসঙ্গে একাধিক প্রকল্প উদ্বোধনের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘একলা চলো রে’ বেজে উঠল।
শেখ হাসিনা মার্চে নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে আসার জন্য নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষ্যে বর্ষব্যপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশের সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদিন নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দৃঢ় করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, করোনা মহামারীর সময় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদীর এই বঙ্গ ‘প্রেম’ নতুন নয়। গত কয়েকমাস ধরেই কখনও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কখনও কবি মনমোহন বসুর কথা উল্লেখ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন, কখনও বিশ্বকবির উক্তি শুনিয়েছেন। সেই কবিতা আবৃত্তির জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্য যথেষ্ট ট্রোলের মুখে পড়েছিলেন। আসলে বাংলার নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই বঙ্গ–প্রেম বাড়ছে।
ভার্চুয়াল সামিট চলাকালীন দুই দেশের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সম্মানে একটি ডাকটিকিটের প্রকাশ করা হয়। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ তাদের অংশে ৬.৭২ কিলোমিটার রেল লাইন বসানোর কাজ শেষ করেছে। আজ ৩২টি খালি ওয়াগন নিয়ে বাংলাদেশের একটি ইঞ্জিন আসবে হলদিবাড়ি। তারপর সেই ওয়াগনগুলি হলদিবাড়িতে রেখে ইঞ্জিন ফিরে যাবে বাংলাদেশের চিলাহাটিতে। তবে কয়েক মাস পরেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। বাঙালি আবেগকে কাজে লাগিয়ে ভোটে বাজিমাত করতে কোনওরকম কসুর ছাড়ছে না বিজেপি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
