দেশ ব্রেকিং নিউজ

মালিক–ভাড়াটের পাশে কেন্দ্র

এখন নানা কারণে বাড়ি–ভাড়া পাওয়া হয়ে উঠেছে বেশ দুষ্কর। কারণ কোনও বাড়িওয়ালা চড়া দামে বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেন। কোথাও আবার ভাড়াটের উৎপাতে বাড়ি ভাড়া দেওয়া থেকেই বিরত থাকছেন বাড়িওয়ালা। দেশজুড়ে ফাঁকা থাকছে লক্ষ লক্ষ ফ্ল্যাট। সুতরাং বাড়িওয়ালা–ভাড়াটে দু’দিক থেকেই নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্ত সমস্যার সমাধানের জন্য এবার মডেল বাড়ি–ভাড়া আইনের সবুজ সংঙ্কেত দিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। এবার এই আইনের আওতায় দেশের বিভিন্ন জেলায় ভাড়াটে ও মালিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিশেষ কর্তৃপক্ষ, আদালত এবং ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে।
কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরির কথায়, এই পদক্ষেপটি সারা দেশে আবাসিক ভাড়া আইনি কাঠামোকে আরও নিয়মবদ্ধ ও সুনিয়ন্ত্রিত করবে। রাজ্য–কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি নতুন আইন তৈরি করে বা বর্তমান বিধি সংশোধন করে মডেল টেন্যান্সি আইনটি প্রয়োগ করতে পারে।
মডেল টেনেন্সি আইন ২০২০ কী?
মডেল ভাড়াটে আইন বা টেনেন্স আইন হল—ভাড়াটে–বাড়িওয়ালা উভয়কেই সুবিধা প্রদানের জন্য কেন্দ্র সরকারের নেওয়া এক পদক্ষেপ। এই মডেল অনুসারে, পূর্বনির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভাড়াটে যদি বাড়ি ছাড়তে না পারেন সেক্ষেত্রে তাঁকে প্রথম দু’মাস দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হবে। এরপরও যদি ভাড়াটে সেই ঘর না ছাড়তে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে তাঁকে প্রতিমাসে চারগুণ করে ভাড়া দিতে হবে বাড়িওয়ালাকে।
কোনও ব্যক্তি যদি ব্যক্তিগত কারণে বাড়ি ভাড়া নেন সেক্ষেত্রে তাঁকে ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসাবে দু’মাসের ভাড়া অগ্রিম দিতে হবে। ব্যবসা সংক্রান্ত কারণে ভাড়া নেওয়া হলে জমা রাখতে হবে ছ’মাসের ভাড়া। ভাড়া নেওয়া বাড়ির কোনও অংশই ভাড়াটে অন্য কাউকে ভাড়া দিতে পারবেন না। জল সরবরাহ বা বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।
এই আইনে বাড়িওয়ালার পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ভাড়াটেদের সুরক্ষার বিষয়টিতেও। এই আইন আনুযায়ী, ভাড়াটেকে যদি বাড়িওয়ালা সময়ের মধ্যে সিকিউরিটি ডিপোজিট ফিরিয়ে না দেন, সেক্ষেত্রে বাড়িওয়ালাকে সেই টাকার উপর সুদ গুণতে হবে। বাড়ি ভাড়া বাড়াতে হলে তিন মাস আগে নোটিশ দিতে হবে। উভয় পক্ষের মধ্যে লিখিত সম্মতি থাকলে জোর করে বা নিয়ম বহির্ভূতভাবে কোনও ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। বাড়ির মেরামতি থেকে শুরু করে রঙ, কাঠামোগত মেরামত, নলকূপের প্রতিস্থাপন এবং নলকূপের পাইপ বদলানো, ঘরে বা বাইরে ইলেকট্রিক মেরামত করার দায়িত্ব বাড়িওয়ালার উপরেই বর্তাবে।
ভাড়াটে–বাড়িওয়ালা সকলেই যেতে পারেন রেন্ট অথরিটির কাছে। রেন্ট অথোরটির আদেশকে রেন্ট ট্রাইবুনালের কাছে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে তারা। বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত এই আইন প্রবর্তনের ফলে ফাঁকা পড়ে থাকা বাড়িগুলিতে ফের ভাড়াটে আসবে। ভাড়া দেওয়া নিয়ে বাড়ি মালিকপক্ষ উৎসাহিত হবে।