দেশ ব্রেকিং নিউজ

‘‌এখনও ধৈর্য ধরে আছি’‌

শনিবার ফেসবুক লাইভ করলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও স্পষ্ট কথা না বললেও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেছেন রাজীব। দলের বিরুদ্ধেও উষ্মা গোপন করেননি। তাঁর অভিযোগ, তিনি কাজ করতে চাইছেন, তাই তাঁকে পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
এদিন তিনি ফেসবুক লাইভে জানান, আজ থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে করোনার টিকাকরণ। আমাদের বাংলাতেও টিকাকরণ চলছে। করোনা বিরুদ্ধে আমরা জিতব। আমি এখনও ধৈর্য ধরে আছি। ধৈর্যচ্যুত হইনি। আমার পদের মোহ নেই, মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। স্বামীজির মতাদর্শেই আগামী দিনে যুবসমাজ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
এরপরই তিনি বলেন, ‘‌চাকরি চেয়ে পাচ্ছে না বলে অনেকেই অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন। এটা আমার খারাপ লাগে। আমার রাজ্যে যে সম্পদ রয়েছে, যে মেধা রয়েছে, তা অন্য রাজ্যে নেই। যুবসমাজকে একটা কথাই বলব, লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে চলবে না। বিপথগামী হলে চলবে না। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। তোমাদের নিয়ে এগিয়ে যাব। তোমরা নিজেরাই কাজের পরিবেশ তৈরি করতে পারবে। যদি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়ে তোলা যায়, অনেকেই হাতে কাজ পাবেন। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র- প্রত্যেকেই যুবসমাজকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন। তাঁদের দেখানো দিশাই আমাদের পাথেয় হোক।’‌ সরাসরি না হলেও পরোক্ষে দলকেই দায়ী করলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
তবে সরাসরিও দলকে ব্যাকফুটে ঠেলেছেন বনমন্ত্রী। তাঁর কথায়, নিজস্ব উদ্যোগে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিনামূল্যে ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করেছি। প্রচুর মানুষ সাহায্য করেছেন। উন্নয়নের কর্মী হিসাবে কাজ করতে চাই। এমন উন্নয়ন হোক যাতে কোথাও ফাঁক না থাকে। যুব সমাজকে বলব লক্ষ্যভ্রষ্ট হবেন না। আমার ধ্যান–জ্ঞান সবই মানুষের জন্য। মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চাই। ভালভাবে কাজ করতে গেলে কিছু নেতারা ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেন। কাজ হয়নি বলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বলতে হচ্ছে। খানিকটা হলেও সাধারণ মানুষের পাশ থেকে সরে গিয়েছে দল। ভুল স্বীকার না করলে মানুষের পাশে থাকা যায় না।
তারপর সরাসরি নেত্রীকে কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘‌আমি একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। সেই দলের কর্মীদের দুঃখ আমি বোঝার চেষ্টা করেছি। তাঁরা শুধুমাত্র একটু সম্মান চান। কিন্তু সেটা যখন দেওয়া হয় না, তখন কষ্ট হয়। আমার দলনেত্রীও কর্মীদের সম্মান দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু যখন সেই সম্মান না পেয়ে কেউ মুখ খোলেন, সেটা কি অন্যায়? কিন্তু দুঃখ লাগে তখনই, যখন আমি একটা ভালো কাজ করতে চাই, তখন কিছু নেতা আমাকে টেনে ধরছেন। কিন্তু আমি সব সময়ই মানুষের সঙ্গেই থাকব।’‌ বিধানসভা নির্বাচনের আগে আজকের এই ফেসবুক লাইভ দলের অস্বস্তি যে বাড়াবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন প্রশ্ন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কী পদ্মাসনে বসবে?‌ উত্তর ক্রমশ প্রকাশ্য।