দুই রাজ্যের সীমানা নিয়ে বিরোধ চরমে উঠেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল মিজোরাম পুলিশ। তা নিয়ে টানটান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত সোমবার যে সংঘর্ষ হয়েছিল তার জেরে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, তাঁর ৬ শীর্ষ আধিকারিক এবং ২০০ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অসমের ইন্সপেক্টর জেনারেল, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, পুলিশ সুপারদের নামও উল্লেখ রয়েছে অভিযোগপত্রে। যা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। এফআইআর করা হয়েছে কাচার জেলার ডেপুটি কমিশনারের বিরুদ্ধেও। অসমের সীমানা লাগোয়া মিজোরামের কোলাসিব জেলার ভেইরেঙ্গতে পুলিশ স্টেশনে এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
বসে নেই অসম পুলিশও। অসম পুলিশের পক্ষ থেকেও মিজোরামের কয়েকদন সাংসদ সহ একাধিক ব্যক্তিকে হাজিরার জন্য সমন দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতিই অসম পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, মিজোরামের সাংসদ কে ভনলালভেনারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি উস্কানিমূলক, সোমবারের হিংসায় তার ভূমিকা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। শুক্রবার ওই সাংসদের দিল্লির বাসভবনে গিয়েও নোটিস দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েক দশক ধরে দুই রাজ্যের মধ্য চলে আসা সীমানা সমস্যা রবিবার রাতে ফের একবার উঠে আসে। সীমান্তবর্তী গ্রামের আট কৃষকের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই রাজ্যের মধ্যে বিবাদ বাধে এবং ঘটনাস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। গুলি চালাতে বাধ্য হয় দুই পক্ষের পুলিশই। ঘটনায় অসমের ৭ পুলিশকর্মী সহ মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন ৫০-রও বেশি। অসম পুলিশের অভিযোগ, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিতই ছিল এবং মিজোরামের ওই সাংসদেরও ভূমিকা রয়েছে এতে। অন্যদিকে, মিজোরামের দাবি, অসম পুলিশই আগে গুলি চালিয়েছিল, তার প্রমাণও রয়েছে তাদের কাছে।
দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করেছিলেন। সেই অনুযায়ীই চলতি সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা দুই রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সীমানায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে জানান। বর্তমানে প্রায় পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী সেখানে মোতায়েন রয়েছে।