দেহব্যবসায় নামা যে কত বড় অভিশাপ তা মাত্র ১১ বছরের নাবালিকার কাছে বোঝা সম্ভব ছিল না। তার মাথায় ছিল তখন একটাই কথা। দুরারোগ্য ক্যানসার থেকে মায়ের মুক্তি। মহারাষ্ট্রের নাগপুরের দরিদ্র পরিবারের সেই নাবালিকা তাই মায়ের চিকিৎসার ৫ হাজার টাকা জোগাড়ে নিজের কুমারী স্বত্তা বিক্রি করতে রাজি হয়ে যায়। আর তার সেই দারিদ্রের সম্পূর্ণ সুযোগ নেয় তিন মহিলা।
যাদের মধ্যে একজন তার মায়ের পরিচিত। তিনজন মিলে ৪০ হাজার টাকায় ওই নাবালিকাকে বিক্রি করে দেয় এক খরিদ্দারের কাছে। কিন্তু বলিউডি ছবির মতোই গল্পে এখানেই ছিল সবচেয়ে বড় টুইস্ট। এমন একটি ঘটনার আভাস ছিল পুলিশের কাছে। তাই পুলিশ ছক কষেই রেখেছিল। তিন মহিলা যে খরিদ্দারের কাছে নাবালিকাকে বেচেছিল, সে আসলে ছিল পুলিশেরই ইনফর্মার। তাঁর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করে নাবালিকাকে। গ্রেপ্তার করা হয় তিন অভিযুক্ত মহিলাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই নাবালিকার মা ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য পরিবারের কাছে টাকা ছিল না। অর্চনা বৈশম্পায়ন নামে এক মহিলা তার মায়ের পরিচিত। সেই সূত্রেই সে নাবালিকার মাকে জানায় যে, নিজের ২ বছরের ছেলেকে দেখাশোনার জন্য ওই নাবালিকাকে বাড়ি নিয়ে যাবে। বদলে তাকে মাসিক বেতন দেবে। কিন্তু তলে তলে অর্চনা ওই নাবালিকাকে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল। আর মায়ের চিকিৎসার কথা বলে সে ওই নাবালিকাকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে দেহব্যবসায় নামার জন্য রাজিও করিয়ে ফেলে। তবে অর্চনা যে সন্দেহজনক কিছু করছে, সেব্যাপারে স্থানীয় এক এনজিও’র কাছে খবর যায়।
তারাই পুলিশকে বিষয়টি জানায়। এরপর অভিযুক্তদের হাতেনাতে ধরতে কাস্টমার সাজিয়ে ইনফর্মারকে পাঠায় পুলিশ। কোরাদি এলাকার এক ফ্ল্যাটে নাবালিকাকে সেই ছদ্মবেশী কাস্টমারের কাছে বিক্রি করার সময়েই পুলিস অর্চনা ও তার দুই সহযোগী রঞ্জনা মেশরাম ও কবিতা নিখারেকে গ্রেপ্তার করে। কোরাদি থানায় ওই তিন মহিলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে ওই নাবালিকাকে পুলিশ তার বাড়িতে ফেরত পাঠিয়েছে।