আন্তর্জাতিক

রোম্যান্টিক ট্রিপেই গ্রেপ্তার চোকসি

পিএনবি কেলেঙ্কারি অভিযুক্ত হিরে ব্যবসায়ীকে দেশে ফেরাতে ভারত সরকারের তত্‍পরতা তুঙ্গে। কিন্তু হঠাত্‍ অ্যান্টিগা থেকে ডমিনিকায় কীভাবে পৌঁছে গেলেন মেহুল চোকসি? প্রেমিকার সঙ্গে কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটাতেই ডমিনিকায় হাজির হয়েছিলেন পিএনবি দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত মেহুল চোকসি। গোটা দেশ যখন তাঁর প্রত্যর্পণ নিয়ে চিন্তাভাবনায় ব্যস্ত, তখনই পুলিশের হাতে চোকসির ধরার পড়ার আসল কারণ সামনে এল। অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রীর দাবি, আচমকা তাঁদের দেশ ছেড়ে মেহুলের ডোমিনিকায় যাওয়ার পিছনে কারণ রয়েছে। নিজের বান্ধবীকে নিয়ে ‘রোম্যান্টিক ট্রিপ’–এ গিয়েছিলেন পলাতক হীরে ব্যবসায়ী!
২০১৮ সাল থেকেই অ্যান্টিগুয়ায় গা–ঢাকা দিয়ে থাকলেও কয়েকদিন আগেই সেখান থেকে নিখোঁজ হয়ে যান মেহুল চোকসি। গত সোমবার সন্ধ্যায় একটি বিখ্যাত রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ করতে গিয়েছিলেন মেহুল চোকসি। তারপর থেকেই কোনও খোঁজ মেলেনি। তাঁর গাড়ি পাওয়া গিয়েছিল জলি হারবারে। সূত্রের খবর, নৌকা করে অ্যান্টিগুয়া থেকে কিউবা পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু ডমিনিকায় স্থানীয় পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে। জানা যায়, কিউবা পালানোর জন্য নয়, বরং প্রেমিকাকে নিয়ে ডমিনিকায় ঘুরতে এসেই ধরা পড়েন চোকসি।
গতকাল রাতে আচমকাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় একটি ছবি। সেই ছবিতে দেখা যায়, জেলের গরাদের পেছনে দাঁড়িয়ে মেহুল চোকসি। পরনে নীল জামা, চোখ দুটি টকটকে লাল। যেহেতু সেখানে প্রত্যর্পণের কোনও আইন নেই, তাই কিউবাতেই যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল‌েন তিনি। কিন্তু মাঝপথে ধরা পড়ে যান ডোমিনিকায়। যদিও তাঁর আইনজীবীর দাবি, অপহরণ করা হয়েছিল কুখ্যাত হীরে ব্যবসায়ীকে। তাঁকে জেলে মারধর করার অভিযোগও উঠেছে। যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে দেখা গিয়েছে জেলবন্দি ব্যবসায়ীর চোখ ফুলে লাল। হাতে কালশিটে, গভীর ক্ষত। কোথাও কোথাও পুড়ে যাওয়ার দাগও রয়েছে। অ্যান্টিগুয়া–বার্বুডার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউনি সরাসরি ডমিনিকা থেকে ওয়ান্টেড চোকসিকে ভারতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার সপক্ষে সওয়াল করেন। তাঁর বক্তব্য, অ্যান্টিগুয়ায় ফিরলে চোকসি আইনি সুরক্ষা পাবে। যেহেতু ডমিনিকায় বেআইনিভাবে প্রবেশ করেছেন হিরে ব্যবসায়ী, তাই সেখান থেকেই সরাসরি তাঁকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন জানিয়েছেন, অ্যান্টিগা থেকে হঠাৎই গায়েব হয়ে নৌকো করে ডমিনিকা দ্বীপে যান চোকসি। সেখান থেকে কিউবা যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। লুকআউট নোটিশ জারি করে পুলিশ। এই মুহূর্তে ডোমিনিকার আদালতের নির্দেশে ২ জুন পর্যন্ত সেখানকার পুলিশের হেফাজতে আছেন হীরে ব্যবসায়ী। আগামী বুধবার তাঁকে ফের আদালতে তোলা হবে। সূত্রের খবর, বুধবারের শুনানিতে ভারত সরকার প্রমাণ করার চেষ্টা করবে, মেহুল চোকসি সত্যিই ভারত থেকে পলাতক এবং তাঁর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ আছে।