জেলা

নন্দীগ্রামে তৈরি তৃণমূলের মাস্টারপ্ল্যান

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট পরিচালনার জন্য নন্দীগ্রামে দু’টি দপ্তর খুলছে তৃণমূল কংগ্রেস। নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকে খোলা হচ্ছে ওই দু’টি অফিস। ২০০৯ সালের এলাকা পুনর্বিন্যাসের পর নন্দীগ্রাম–১ এবং ২ নম্বর ব্লক নিয়ে তৈরি হয়েছে নন্দীগ্রাম বিধানসভা। ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক তৃণমূল নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই এখন প্রেস্টিজ ফাইট। বিজেপির পক্ষ থেকে নন্দীগ্রাম থেকে লড়বেন শুভেন্দু, আপাতত খবর এমনটাই। আর তৃণমূলের হয়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়াচ্ছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নন্দীগ্রামে খোদ মমতার জন্যও বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা ভাবছে শাসকদল। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ভোট যুদ্ধের ব্লু–প্রিন্ট। দলের শীর্ষ নেতারা এসে স্থানীয় নেতা–কর্মীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক সেরেছেন। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। নন্দীগ্রাম নিয়ে তৃণমূলে প্রস্তুতি একটু বেশিই। কারণ, সেখানে প্রার্থী খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ আবার রীতিমতো হেভিওয়েট। সব ঠিক থাকলে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী। যিনি আবার মমতাকে ৫০ হাজার ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।
প্রচারে কোন কোন বিষয়ে প্রাধান্য দিতে হবে তার গাইডলাইন তৈরি হয়েছে বৈঠকে। নেত্রীকে জেতাতে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব। দেওয়াল লিখন, পোস্টার লাগানোর কাজ ও শুরু হয়ে গিয়েছে। নন্দীগ্রামে থেকেই চলবে ভোটের প্রস্তুতি। তাই নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের বটতলায় চার কামরার একটি বাড়ি এবং নন্দীগ্রাম দুই ব্লকের রেয়াপাড়াতে ৭ কামরার একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। রাজ্যস্তরের নেতারা প্রায় নিয়ম করে নন্দীগ্রামে যাতায়াত শুরু করেছেন। সেই ঘটনাপ্রবাহ মেনেই ভোট পরিচালনার জন্য একজোড়া অফিস তৈরি হচ্ছে নন্দীগ্রামে।
এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না হলেও নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারের প্রস্তুতি তুঙ্গে। এই নির্বাচনে নন্দীগ্রাম বাড়তি সংবেদনশীলতা চোখে পড়ছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। নন্দীগ্রামে জোড়া অফিস খোলা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতারা জানাচ্ছেন, নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের রাজনৈতিক ও সামাজিক চরিত্র ভিন্ন। নন্দীগ্রাম–১ ব্লক যেমন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত, তেমনই আবার নন্দীগ্রাম–২ ব্লকে সংখ্যাগুরুদের প্রাধান্য। তাই পৃথক দু’টি কার্যালয় খোলা হচ্ছে। নন্দীগ্রামে গিয়ে নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে এসেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামে ভোট পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে। নন্দীগ্রামে গিয়ে নির্বাচনের কাজকর্মে সহায়তা করতে বলা হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনকে।