ফের মাওবাদী পোস্টার জঙ্গলমহলে। ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। এই পোস্টার দেখতে পান গ্রামবাসীরা। পোস্টারে বিনপুর এলাকার কয়েকজন গ্রামবাসীকে সামাজিকভাবে বয়কট করার কথা বলা হয়েছে। অমান্য করলে জরিমানা করা হবে। হুমকিরও উল্লেখ রয়েছে। লাল রঙে লেখা পোস্টারে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ বাধা হলে পরবর্তী লক্ষ্য পুলিশের গাড়ি। তারা তাতে হামলা চালাবে।
এই বিষয়টি জেলা পুলিশের গোচরে আসে। ওই এলাকায় যান স্থানীয় থানার অফিসাররা। তাঁরা দেখেন বেশ কয়েকটি দেওয়ালে এই পোস্টার লাগানো রয়েছে। তাতে বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে। যাঁরা ওই গ্রামের বাসিন্দা। এই পরিবারগুলিকে সামাজিক বয়কটের পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে। সেখানে লেখা নামগুলি দেখে সন্দেহ হয় তদন্তকারী অফিসারদের।
লেখার ধরন দেখেও সন্দেহ জাগে অফিসারদের। যাঁদের নাম পোস্টারে লেখা ছিল সেখানে যান অফিসাররা। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এটা নিছকই গ্রামের দুই পরিবারের ঝামেলা। অনেক দিন ধরেই তাঁদের মধ্যে গোলমাল চলছে। এমনকী একপক্ষ শাসক দলে ও অন্যপক্ষ বিজেপির সমর্থক বলে জানতে পারে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে এই পোস্টার মাওবাদীদের লেখা নয়। একপক্ষ অন্যপক্ষকে ভয় দেখাতেই ‘মাওবাদী’ নামটি ব্যবহার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মাওবাদী নামাঙ্কিত লাল রঙে লেখা দু’টি পোস্টারে গ্রামেরই কয়েকজনকে সামাজিক বয়কটের কথা বলা হয়েছে। গ্রামের আলোক চন্দ, টুসেন রানা, ধরা নায়েককে সামাজিক বয়কটের কথা পোস্টারে লেখা হয়েছে। বয়কট না মানলে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানার কথাও বলা হয়েছে। ওঁরা সবাই বিজেপি কর্মী সমর্থক বলে পরিচিত। এই বয়কটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গ্রামেরই কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের উপর। তাঁরা দায়িত্ব পালন না করলে দু’লক্ষ টাকা করে জরিমানার কথা পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্বপন শবর অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের জেলা সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ডের সদস্য। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা বিন্দুমাত্র আতঙ্কিত নয়। বদমায়েশি করে এই সমস্ত কাজ কেউ করেছে।’ বিনপুর-২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চিন্ময় মাহাত বলেন, ‘এড়গোদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাটি চিরকালই শান্ত ছিল। এখনও শান্ত রয়েছে। বিজেপির কিছু লোকজন আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য এই কাজ করেছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’