মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি বিজেপিকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় ঘৃণ্য রাজনীতি শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। চাকরির প্রতিশ্রুতি কার্ড আসলে ‘চিটিংবাজি’ বলেই দাবি করলেন তিনি। আত্মবিশ্বাসী কন্ঠে বললেন, বাংলা তৃণমূলের দখলেই থাকবে।
এদিন মমতা বলেন, ‘চা–বাগান খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি বিজেপি। বিজেপি’র প্রতিশ্রুতি মানেই প্রতারণা। মনে রাখবেন বাংলা এক মাত্র জায়গা, যেখানে কোনও অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের কোনও উন্নয়নের কাজ করেনি আগে কেউ। আমরা সেই কাজকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।’
একুশের নির্বাচনকে পাখির চোখ করে চলতি মাসের শুরু থেকেই জনসভা শুরু করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গে বেশ কয়েকটি সভা করেছেন তিনি। সোমবার গিয়েছেন উত্তরবঙ্গ সফরে। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির অরবিন্দ ব্যায়ামাগার পাঠাগার ও ক্লাব ময়দানে একটি জনসভা করেন তিনি। সেখান থেকে বিজেপিকে লাগাতার আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘ওরা বাংলায় এক নতুন ধর্ম এনেছে, ঘৃণ্য ধর্ম। কুৎসার ধর্ম। এভাবে ওরা বাংলাকে ধ্বংস করতে চায়। কোনওভাবেই বিজেপি’র এহেন আচরণ বরদাস্ত করবেন না।’
তিনি জানান, এখন বলছে, এনআরসি চালু করা হবে। আমি বলছি, বিজেপি’র এনআরসি’র গাঁট্টা খেতে হবে না কাউকে। আমরা সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনির স্বীকৃতি দিয়েছি। প্রশ্ন করেন, আদৌ কারও অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রের ১৫ লক্ষ টাকা গিয়েছে? দাবি করেন, মোদী সরকারের আমলে ভারতে বেকারত্ব বেড়েছে। এদিন দিলীপ ঘোষের ‘ডিসেম্বরের পর মারব’ মন্তব্যের পালটা দিয়ে মমতা জানান, মেরে দেখাক, আমার গায়ে আঘাত করতে আমিও প্রত্যাঘাত করব। সবমিলিয়ে এদিনও মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় ছিল কেন্দ্র।২০১৪-তে বলেছে, ২০১৯-এ বলছে, বছরে দু’কোটি বেকারকে চাকরি দেব। দিয়েছে? আর এখন চাকরির ফর্ম বিলি করছে। বলেছিল, জিতলে সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দেব। ক’জন পেয়েছেন? কেউ পাননি। মিথ্যে, অসত্য, উল্টোপাল্টা এবং কু–কথা বলার জন্যই আছে।
তবে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট এলেই গোর্খাল্যান্ড ইস্যু তোলে বিজেপি। বিমল গুরুংকে একাধিকবার বলেছে গোর্খ্যালান্ড দিয়ে দেব। একেকবার বলেছে, আর জিতেছে। ক’টা গোর্খাল্যান্ড দিয়েছে? দার্জিলিংয়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করলে আমরাই করব। দার্জিলিং নিজের মতো ভালো থাকবে, তরাই–ডুয়ার্স নিজের মতো ভালো থাকবে। বিজেপির মতো চোর আর নেই। চম্বলের ডাকাতরা আসছে। মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে।’
