রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলির নির্দেশের বিরুদ্ধে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা পরায়ণ রাজনীতি করার অভিযোগে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিন মাসের মেয়াদ বৃদ্ধি করার পরও আচমকাই রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী–স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপকে পুরোপুরি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতিহিংসামূলক বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। মমতার তোপ, ‘আলাপন কি একজন বাঙালি আমলা বলেই এত রাগ?’ করজোড়ে তাঁর অনুরোধ, এই নির্দেশ প্রত্যাহার করুন। এই নোংরা খেলা খেলবেন না।
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর অভিযোগ, তিনি এবং মুখ্যসচিব–সহ গোটা সরকার যখন করোনা অতিমারি এবং ইয়াস বিপর্যয়ের ধাক্কা থেকে রাজ্যকে বের করে আনার চেষ্টা করছেন, তখন রাজ্য সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী–স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ মমতা অভিযোগ করেন, নির্বাচনে হার মেনে নিতে না পেরেই কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে এমন আচরণ করছে বিজেপি৷ রাজ্যের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যাতে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলি করা না হয়৷
মমতার বিরুদ্ধে রাগ মেটাতেই কি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এভাবে ডেকে নেওয়া হয়েছে? এই প্রশ্নও সরাসরি কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত এবং নিয়োজিত এই আধিকারিকরা কিন্তু রাজ্যের আওতাধীন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওনার দোষ কী, উনি আমার সঙ্গে কাজ করছেন৷ রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে৷’ মমতা অভিযোগ করেছেন, এভাবে মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং আইএএস অফিসারদেরও অপমান করেছে কেন্দ্র৷ আমাকে একা বিরক্ত করছেন না, আমার সচিব, সচিবালয়কে বিরক্ত করছেন৷ গোটা দেশের মুখ্যসচিবদের, আইএএস অফিসারদের বিরক্ত করছেন৷ সরকার, মুখ্যসচিব, সবাইকে বিরক্ত করছেন৷ কেন এভাবে আচরণ করছেন? আমরা ঐতিহাসিক জয় পেয়েছি বলে? ভোটের সময় কী করেননি? দয়া করে মানুষের রায় মেনে নিন৷
স্বাধীনতার পর থেকে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কি না সেটা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আমরা বিরাট ব্যবধানে জয় পেয়েছি এটাই কি আমাদের অপরাধ? আমি আপনার কাছে নমস্কার করে বলব প্রধানমন্ত্রী, যদি আপনার কোনও রাগ আমার উপর থাকে, আপনার দুটো পা ধরলে আপনি যদি খুশি হন আমি তাই করব। বাংলার জন্য আমি তাই করতে পারি। কিন্তু দয়া করে এই নোংরা খেলা না খেলে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করুন।’
