রাজ্য

রাজ্যজুড়ে মোদী–মমতা দ্বৈরথ

কলকাতায় নরেন্দ্র মোদী। আর উত্তরবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৭ মার্চ বাংলায় আরও চড়া সুরে বাজতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে থাকছে নিরাপত্তার কড়াকড়ি করা হয়েছে। বিজেপিকে কলকাতায় এতটুকু ফাঁকা জমি ছাড়তে রাজি নয় তৃণমূল কংগ্রেস। মোদী যখন ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করার ডাক দেবেন, তখনই শিলিগুড়িতে তেল–গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর কলকাতা মোড়া থাকবে ঘাসফুলের পোস্টার–ব্যানার–হোর্ডিংও। বিজেপিও পদ্ম–পতাকায় ছেয়ে দেবে বলে ঠিক করেছে।
দলীয় সূত্রে খবর, শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ি থেকে ভেনাস মোড় পর্যন্ত হিলকার্ট রোডের উপর মিছিল হবে। বিজেপিও ব্রিগেড সভা সফল করতে রাজ্যের প্রতিটি মহকুমায় মিটিং–মিছিল শুরু করেছে তারা। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‌ওইদিন জনতার ব্রিগেড হবে। মানুষের ঢল নামবে। শিলিগুড়িতে তৃণমূলের মিছিল নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না।’‌ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‌আমি তো বিজেপির ব্রিগেড নিয়ে সাধারণ মানুষের কোনও উচ্ছ্বাস দেখছি না। ওটা টাকার ব্রিগেড হবে। আর বিজেপি নেতারাও তো টিকিট পাবেন কি না, তাই নিয়েই মেতে আছেন।’‌ ঢেলে সাজানো হচ্ছে ব্রিগেড চত্বর। মূল মঞ্চ ২০০ বাই ১৫০ মিটার। দু’‌পাশে ৫০ মিটার জায়গা ছেড়ে ডান ও বাঁ–দিকে আলাদা আরও দুটো মঞ্চ। প্রথমটি প্রধানমন্ত্রী–সহ কেন্দ্র ও রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের জন্য।
ইতিমধ্যেই কলকাতা শহরকে দলীয় পতাকায় মুড়ে ফেলার জন্য তৃণমূলের সব ওয়ার্ড কো–অর্ডিনেটরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য গড়ে এক হাজার করে ফ্ল্যাগ–ফেস্টুন পাঠানো হয়েছে। চৌরঙ্গি এবং কালীঘাটের আশপাশে যে সব ওয়ার্ড রয়েছে তাদের জন্য গড়ে দু’‌হাজার ফ্ল্যাগ–ফেস্টুন বরাদ্দ করা হয়েছে। সব থেকে বেশি জোর দিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারে। রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‌তৃণমূলের সব চেষ্টাই জলে যাবে। মোদী ব্রিগেড থেকে কী বার্তা দেন, সেদিকে শুধু বিজেপি কর্মীদেরই নয়, গোটা দেশের নজর থাকবে।’‌ পাশের দুটি মঞ্চ আঞ্চলিক নেতা এবং সংবাদমাধ্যমের জন্য। এরপর সামনে পরপর চারটি নিরাপত্তা ব্যারিকেড। প্রথমটির দায়িত্বে কলকাতা পুলিশ।
মোদীর ব্রিগেডের পরের দিনই রয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ওই দিন কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত একটি মহামিছিলের আয়োজন করছে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। সেই মিছিলে পা মেলাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মিছিল শেষ হওয়ার পর ধর্মতলায় তিনি ভাষণ দেবেন। দলের মহিলা ব্রিগেডকে চাঙ্গা করতে মুখ্যমন্ত্রী এবারও আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মিছিলে হাঁটবেন। অনেকে মনে করছেন, বিধানসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে ব্রিগেডে রেকর্ড সংখ্যক ভিড় করিয়ে রাজ্যবাসীকে চমক দিতে চাইছে বিজেপি। পরের দুটি মঞ্চ এসপিজি এবং শেষেরটি পিএমও স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের দায়িত্বে। গোটা চত্বরে মোট ১৫০০ সিসিটিভি ক্যামেরা। মঞ্চের পিছনেই মনিটরিং কন্ট্রোল রুম। সাতই মার্চ ভোরবেলা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শহরে কোনও পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হবে না। ব্রিগেড লাগোয়া চত্বরে ট্রাম চলাচল বন্ধ রাখা হবে।