দেশ লিড নিউজ

কেন্দ্র–শুভেন্দুকে একসঙ্গে তুলোধনা মমতার

শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর মেদিনীপুরে প্রথম জনসভায় অধিকারী পরিবারের নাম নিলেন না তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নাম না করেই বুঝিয়ে দিলেন অধিকারীদের ছাড়াই জেলায় চলতে তৈরি দল। মেদিনীপুরের সভা থেকে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিলেন তিনি। শুরুটাই করলেন অন্য আঙ্গিকে। শুভেন্দুকে নিয়ে জল্পনার আবহেই মমতার মন্তব্য, ‘যদি কেউ মনে করে তৃণমূলকে ব্ল্যাকমেল করব, বার্গেন করব, ভোটের সময় দলকে বিপদে ফেলব, জেনে রাখুন কিছু করতে পারবেন না।’‌
এদিন তিনি জানান, ‌এই মেদিনীপুরের মাটিতেই আন্দোলন হয়েছে। আমরা অতীত ভুলি না। গোটা ভারতের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছি। তারপরেই নিজস্ব রণংদেহী মেজাজে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌নবান্নের ধান ছুঁয়ে শপথ করলাম। কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছো। দাঙ্গা লাগাচ্ছ, মিথ্যে বলছো, দল ভাঙছো, জেনে রেখো তোমাদের উত্‍খাতের সময় এসেছে। আগে নিজেদের বাঁচাও।’‌
বক্তব্যের মাঝে মেদিনীপুরে অখিল গিরির ভূমিকা তুলে ধরেন মমতা বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস যখন তৈরি করেছিলাম, কাঁথি থেকে প্রথম অখিল গিরি লড়াই করেছিল। সেদিন হয়তো আমরা জিততে পারিনি। কিন্তু আমরা দ্বিতীয় হয়েছিলাম। প্রথমবার, মাত্র ২২ দিনের জায়গায়।’‌ এদিন তিনি অভিযোগ করেন, নতুন আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। ব্লকে ব্লকে বিজেপি নতুন লোক নিয়োগ করেছে। কারা কী কাজ করছে তার ওপর নজরদারি করতে হবে। ৮ ডিসেম্বর থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল অবস্থান শুরু করছে। তিনিও সেই আন্দোলনে যোগ দেবেন। আগে আলুর দাম বৃদ্ধি হলে রাজ্য ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু এখন তা নেওয়ার ক্ষমতা রাজ্যের নেই। তিনি বেগুন, পিঁয়াজ তুলে ধরে বলেন, দেশে আলু, পিঁয়াজ, মূলোর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দিল্লি সব খাবে, রাজ্য কিছু করতে পারবে না।
সরকার ভাঙছে, ঘর ভাঙছে। বিজেপি তুমি তৃণমূল কংগ্রেসকে কিনতে পারবে না। মার খেতে খেতে এসেছি এই জায়গায়। তৃণমূল কংগ্রেস ঠুনকো নয়। বহিরাগতদের বাংলা দখল করতে দেব না হুঙ্কার ছেড়ে তিনি বলেন, ‘‌কোভিডের টাকা দেয়নি। কোন মুখে হিসেব চাইছে কেন্দ্র? এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বিজেপি। গুজরাট বানাতে দেব না বাংলাকে। বিজেপি-র অনেক গুন্ডা আছে। অনেক টাকা আছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের মতো কর্মী নেই।’‌ সভা শেষে দলের কর্মীদের মমতার তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা, ‘কোনও প্ররোচনার কাছে মাথানত করবেন না। কোনও অত্যাচারের কাছে মাথানত করবেন না’। এদিন মেদিনীপুরে মমতার সভায় হাজির ছিলেন না অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্য। সভায় ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরাও। এদিনের সভায় নাম করে বিধায়কদের হাজিরা নিতে দেখা যায় তৃণমূলনেত্রীকে।