এ যেন গণতন্ত্রের কালো দিন। কারণ স্বয়ং বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। একেবারে নাটকীয় মোড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী ২৪ ঘণ্টা প্রচার করতে পারবেন না। এমন নিষেধাজ্ঞাই জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। প্ররোচনামূলক মন্তব্যের জেরেই এই নিষেধাজ্ঞা বলে জানিয়েছে কমিশন। আজ রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না মমতা। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবারই ধর্নায় বসছেন মমতা।
জানা গিয়েছে, কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বেলা ১১টা থেকে ধর্ণায় বসতে চলেছেন তিনি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ তৃণমূলের৷ তার পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ধর্ণায় বসার কথা জানালেন, তাও এক কথায় নজিরবিহীন হতে চলেছে৷
উল্লেখ্য, সংখ্যালঘু ভোট ভাগ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মন্তব্যের জেরে কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। তার জেরে তৃণমূল সুপ্রিমোকে নোটিশ পাঠায় কমিশন। এই প্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জবাব সন্তোষজনক নয় বলে জানাল নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে গত শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে দ্বিতীয়বার নোটিশ পাঠায় কমিশন। কেন গত ২৮ মার্চ এবং ৭ এপ্রিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছিলেন তিনি তা জানতে চাওয়া হয় ওই নোটিশে। এই বিষয়ে মমতা বলেছিলেন, একটা কেন ১০টা নোটিশ পাঠাতে পারেন আমাকে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে যখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সায়ন্তন বসু এবং রাহুল সিনহা উস্কানিমূলক মন্তব্য করলেও নির্বাচন কমিশন কেন কোনও পদক্ষেপ করল না? কমিশনের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে৷ গত ৭ এবং ৮ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীকে শো–কজ করে নোটিশ পাঠিয়েছিল কমিশন৷ কিন্তু তার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী যে ব্যাখ্যা দেন, তাতে সন্তুষ্ট না হয়েই কমিশন এই নির্দেশ দিয়েছে৷ কিন্তু তৃণমূল এবং সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ ঠুকলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি কমিশন। এখানেই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠছে।
এই বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপির শাখা সংগঠন নির্বাচন কমিশন কুৎসিতভাবে এই কন্ঠরোধের চেষ্টা করল। কুৎসিত করে ব্যবহার করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তার প্রতিবাদ করায় এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এই অপচেষ্টা সফল হবে না।’ কমিশনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইটারে লিখেছেন, ‘১২ এপ্রিল, গণতন্ত্রের কালো দিন।’
