বাস ভাড়া বাড়লে তার প্রভাব পড়বে ভোটবাক্সে। ২০২১ সালে এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই বিকল্প পথে হাঁটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজকোষের ক্ষতি মেনে নিয়ে বেসরকারি বাসকে পথে নামাতে হচ্ছে। যা এককথায় নজিরবিহীন। কারণ মুখ্যমন্ত্রী থেকে পরিবহণমন্ত্রী কারও অনুরোধেই কাজ হল না। বাস মালিকদের অনড় মনোভাবই জয়ী হল। তাই আপাতত বাসের ভাড়া বাড়ছে না। পরিবর্তে বেসরকারি ছ’হাজার বাস পিছু ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে বলে শুক্রবার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই জন্য খরচ হবে ২৭ কোটি টাকা। চালক ও কন্ডাক্টরদের নিয়ে আসা হচ্ছে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায়। শুক্রবার নবান্নে এই কথাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একদিকে সরকারি নির্ধারিত যাত্রী নিয়ে বাস চালিয়ে লোকসান অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ক্ষতির বহর চওড়া হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাসের ভাড়া বাড়ানোর দাবি এবং একাধিক বৈঠকের পরেও কোনও সমাধান সূত্র মিলছিল না। অগত্যা বিকল্প পথ প্যাকেজেই খুশি করা হল।
শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ভাড়া বাড়ানো হবে না। বরং তিন মাস ১৫ হাজার টাকা করে বাস মালিকদের ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার। যদিও এই ঘোষণায় অবশ্য খুশি নয় বাস মালিক সংগঠনের। বাস মালিকদের দাবি, তাঁদের প্রত্যেকদিন বাস নামাতে খরচ হয়, জ্বালানি বাবদ ৩৫০০ টাকা, বাসচালকের মাইনে ৮০০টাকা, কন্ডাক্টরের মাইনে ৫০০ টাকা অন্যান্য খরচ বাবদ ১০০০ টাকা। মোট দৈনিক খরচ হয় ৫ হাজার ৮০০ থেকে ৬ হাজার টাকা। আর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভাড়া বাড়াতে পারছি না। তবে বাসের ভাড়া না বাড়িয়ে আগামী তিন মাসের জন্য বেসরকারি বাস পিছু ১৫ হাজার টাকা করে সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হবে।’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর বাস সংগঠনগুলি দাবি করেছে, কলকাতায় ছ’হাজার বাসকে ভর্তুকি দেওয়া হলেও সারা রাজ্যে আরও ৪৬ হাজার বাস রয়েছে। সেগুলির কী হবে, তা স্পষ্ট করে জানাতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি কোনও বাস মালিক টাকা পেয়ে যাওয়ার পর বাস না চালান সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? বাসের পরিকাঠামো কতটা উন্নত হবে? বাস ঠিক মত নামছে কিনা, তার নজরদারি কারা চালাবে? তাতেও যদি বাস মালিকদের মন না ভরে, তাহলে তো নিত্যদিনের হয়রানির সমস্যাটা থেকেই যাচ্ছে!