মৃত্যুদিবসেও মর্মান্তিক আক্রমণ। বিদেশের মাটিতে ভাঙচুর করা হল জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি। ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্ট্রাল পার্কের এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রবাসী ভারতীয়রা। এই ঘটনাকে ‘বিদ্বেষমূলক’ অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে যথাযথ তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা। ঘটনার পর মূর্তিটি মেরামত করার জন্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সিটি অব ডেভিসের পার্কে বহুদিন ধরেই মহাত্মা গান্ধীর একটি মূর্তি বসানো ছিল। সেই মূর্তিকে বা কারা ভেঙে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। ৬ ফুট লম্বা ও ২৯৪ কেজি ওজনের ব্রোঞ্জের ওই মূর্তিটি গোড়ালি থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। এমনকী মূর্তির মাথার একাংশ কেটে ফেলা হয়েছে।
শনিবার সকালে পার্কের এক কর্মীর চোখে পড়ে, মূর্তিটি ভাঙা। কেউ মূর্তিতে হামলা চালিয়ে তা ভেঙেছে। তিনি পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও কে বা কারা এই ঘৃণ্য কাজ করেছে, সে বিষয়ে কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি এখনও। কোন উদ্দেশেই বা মহাত্মা গান্ধীর মতো মনীষীর মূর্তি ভাঙচুর, সেই উদ্দেশ্যও অজ্ঞাত। তবে ঘটনাকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। ডেভিস শহরের পুলিশ অফিসার পল ডোরোশভের কথায়, ডেভিস শহরের একদল বাসিন্দা মনে করছেন, এই ঘটনা আসলে সংস্কৃতির উপর আঘাত। তদন্ত চলছে।
এই নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন প্রবাসী ভারতীয়রা। তদের ক্ষোভের কথা মাথায় রেখে শহরের মেয়র জানান, খুব শীঘ্রই ওই মূর্তি ফের তৈরি করে দেওয়া হবে। মেয়র কাউন্সিলের সদস্য লুকাস ফেরিচ সংবাদমাধ্যমে জানান, আপাতত ওই মূর্তিটিকে সরিয়ে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটি ফের তৈরি করে দেওয়া হবে। বছর চার আগে এই শহরে ভারত এবং গান্ধীবিদ্বেষী বিক্ষোভ উসকে উঠেছিল। তখন প্রতিবাদস্বরূপ ভারত সরকার ডেভিস শহরে এত বড় ব্রোঞ্জের মূর্তি পাঠিয়েছিল। যদিও মূর্তিটি বসানো নিয়ে রীতিমত ভোটাভুটি হয়। ডেভিসের ভারতীয় সংখ্যালঘু সংগঠন মূর্তি বসানোর বিরোধিতা করেছিল। তবে তাদের আপত্তি ধোপে টেকেনি। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার সমর্থনে সযত্নে সেন্ট্রাল পার্কে বসানো ব্রোঞ্জের গান্ধীমূর্তি। তাই এই মূর্তি প্রতিবাদেরও প্রতীক।
খালিস্তানপন্থী একটি সংগঠন ওই মূর্তি ভাঙার ঘটনায় খুশি প্রকাশ করেছেন। তাদের ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, আজ খুব ভালো দিন। ক্যালিফোর্নিয়ার হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন ওই ঘটনার এফবিআই তদন্তের দাবি করেছে। সংগঠনের প্রধান এসান কাটির বলেন, ‘আমরা চাই যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক।’