”শুধু বিয়ে করার জন্য কেউ ধর্মান্তরিত হলে তা বৈধ বলে গণ্য হবে না”, এ রায় ঘোষণার দিনকয়েকের মধ্যেই তা পুরোপুরি উল্টে দিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট নতুন রায় দিল।
উত্তরপ্রদেশে একজন মুসলিম যুবক ও একজন হিন্দু যুবতীর বিয়ের বিরুদ্ধে মেয়ের বাবা আদালতে গেলেও হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে ওই দম্পতিকে তারা হিন্দু বা মুসলিম হিসেবে দেখতে রাজি নন – বরং তারা মনে করেন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হিসেবে তাদের দুজনের স্বাধীন জীবনযাপনের অধিকার আছে।
সম্প্রতি ‘লাভ জেহাদ’ বা হিন্দু-মুসলিম বিয়ের বিরুদ্ধে আইন তৈরি করার যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, এই রায়ের পর সেই চেষ্টা হোঁচট খাবে বলেই আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরের বাসিন্দা সালামাত আনসারি গত বছরের আগস্টে বান্ধবী প্রিয়াঙ্কা খারওয়ারকে বিয়ে করেছিলেন, যে বিয়েতে প্রিয়াঙ্কার বাবা-মার মোটেই মত ছিল না। বিয়ের ঠিক আগে প্রিয়াঙ্কা ইসলামে ধর্মান্তরিত হন ও নিজের নতুন নাম নেন আলিয়া। সে মাসেই প্রিয়াঙ্কার বাবা-মা সালামাতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে অভিযোগ আনেন, তাদের নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করে ও ধর্মান্তরিত করে জোর করে বিয়েতে বাধ্য করা হয়েছে।
সেই এফআইআর খারিজ করার আবেদন নিয়ে সালামাত আনসারি এলাহাবাদ হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলে বিচারপতি বিবেক আগরওয়াল ও পঙ্কজ নাকভির ডিভিশন বেঞ্চ শেষ পর্যন্ত তার অনুকূলেই রায় দিয়েছে।
আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী রোহিত নাগপাল বলছিলেন, “দেশের আইন যখন সমলিঙ্গের মানুষদেরও নিজেদের মধ্যে বিয়ে করার অনুমতি দিচ্ছে – তখন পাত্রপাত্রীর ধর্মীয় পরিচয় কীভাবে বিয়ের ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে?” “কোর্টের রায়েও ঠিক এটাই বলা হয়েছে যে ওই দুজনকে আমরা হিন্দু-মুসলিমের দৃষ্টিতে দেখছিই না। বরং দেখছি দুজন সাবালক ব্যক্তি হিসেবে, যাদের নিজস্ব জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার আছে।”