দুটো ফ্রেম। এক, রামমন্দিরের ভূমিপুজোর উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুই, অন্ধকার একটি ফ্রেম। যেখানে থাকবেন না লালকৃষ্ণ আদবানি এবং মুরলি মনোহর যোশী। আগামী ৫ আগস্ট আলো–আঁধারির এই ফ্রেম দেখতে পাবে গোটা দেশ। ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর থেকেই বিতর্কিত এই বিষয়ে চলে যায় আদালতের কাছে। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, বিতর্কিত জমিতে হবে রামমন্দিরই। আর মসজিদ নির্মাণের জন্যে অযোধ্যাতেই পাঁচ একর জমি দিতে হবে।
এবার সেই নির্দেশ অনুযায়ী, অযোধ্যারই ধান্নিপুরে ৫ একর জমি দেওয়া হয় মসজিদের জন্যে। রামমন্দির নির্মাণের প্রস্তুতি হিসেবে আগামী ৫ আগস্ট হতে চলেছে ভূমিপুজো। উপস্থিত থাকবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমন্ত্রিতদের তালিকা খুবই সংক্ষিপ্ত। সূত্রের খবর, এদিন রামমন্দিরের ভূমিপুজোয় উপস্থিত থাকবেন না প্রাক্তন উপ–প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি এবং মানবকল্যাণ মন্ত্রী মুরলি মনোহর যোশী। প্রবীণ এই দুই নেতা কেন এমন বিশেষ দিনে উপস্থিত থাকবেন না, তা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। শুধুমাত্র বয়সজনীত কারণ নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও ব্যাখ্যা, তা জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, অযোধ্যায় এই ভূমিতে রামমন্দির তৈরি করার যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যার জেরে দেশকে দেখতে হয়েছিল ১৯৯২ সালের আতঙ্ক, তার পুরোধা ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি এবং মুরলি মনোহর যোশীই। লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার বিচার চলছে। লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলী মনোহর যোশী এবং ঊমা ভারতী–সহ মামলার অন্য অভিযুক্তদের বয়ান নথিভুক্ত করার জন্য সমন পাঠিয়েছিল আদালত। সিবিআই আদালতকে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলি মনোহর যোশী, ঊমা ভারতী–সহ অন্যদের বিরুদ্ধে চলা এই মামলার বিচারপর্ব ও রায়দান শেষ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত।
তাঁদের মামলা এখনও বিচারাধীন বলেই কী এই দূরত্ব সৃষ্টি? উঠছে প্রশ্ন। তবে ভূমিপুজোয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, ভিএইচপি সহ–সভাপতি ও মন্দির ট্রাস্টের সাধারণ সচিব চম্পাট রাই এবং রাম জন্মভূমি ন্যাসের প্রধান মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস। অনুষ্ঠানটির সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ৫ আগস্ট সকালে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বায়ুসেনার বিমানে লখনউয়ের চৌধুরি চরণ সিং বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। সেখান থেকেই অযোধ্যা রওনা দেবেন বায়ুসেনার এমআই–৭ হেলিকপ্টারে।
