When the whole world was fighting over Corona, the dispute between the two constitutional heads of the state reached its climax.
রাজ্য লিড নিউজ

পত্র–বোমায় ছত্রাখান রাজ্য–রাজভবন সম্পর্ক

করোনা নিয়ে যখন গোটা বিশ্ব তোলপাড় তখন রাজ্যের দুই সাংবিধানিক প্রধানের বিরোধ চরম আকার ধারণ করল। আর তার জেরে রাজনীতির পারদ তুঙ্গে উঠেছে। একেবারে যাকে বলে পত্রযুদ্ধ। মুখ্যমন্ত্রীকে এবার ১৪ পাতার পত্র–বোমা পাঠালেন রাজ্যপাল। যে চিঠির মূল বিষয়— মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি দোষারোপ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। তাঁর অভিযোগ, করোনা ঠেকাতে রাজ্য সরকার ব্যর্থ। গতকাল রাজ্যপালকে দেওয়া ৫ পাতার জবাবি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, আপনার শব্দচয়ন এবং বলার ভঙ্গি অসাংবিধানিক। আপনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন, আমি নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। আর আপনি মনোনীত রাজ্যপাল।’‌ রাজ্যপালের দেওয়া পাল্টা ১৪ পাতার চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাজের সমালোচনাও করেছেন ধনকার। মুখ্যমন্ত্রীর মাইক নিয়ে রাস্তায় নেমে প্রচার, সাফাইকর্মীদের সঙ্গে কাজের সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর ৫ পাতার চিঠির পর রাতেই পাল্টা ৫ পাতার চিঠি দেন রাজ্যপাল। আর পরেরদিনই আবার ১৪ পাতার চিঠি দিলেন জগদীপ ধনকার।
শুক্রবার পাঠানো দ্বিতীয় চিঠিতে করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি ব্যর্থ বলে উল্লেখ করলেন রাজ্যপাল। এই দীর্ঘ চিঠিতে ৩৭টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন তিনি। করোনার পাশাপাশি এর আগে ঘটা আরও নানা প্রসঙ্গও তুলে ধরেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, করোনা মোকাবিলায় আপনি ব্যর্থ। কৌশলে দৃষ্টি ঘোরাচ্ছেন। আপনি সংখ্যালঘুদের তোষণ করছেন। আপনাকে নিজাউদ্দিনের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আপনি বলেন এই প্রশ্ন সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন। যা একেবারেই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আপনি আপনার অন্তরাত্মার কথা শুনুন। আপনি আইনের ঊর্ধ্বে নন। সুপ্রিম কোর্টও তাই বলে। আপনি সংবিধান অবমাননা করেছেন।
একদিকে মানুষ যখন করোনা মহামারীর সঙ্গে যুঝতে ব্যস্ত, তখন রাজ্য–রাজ্যপাল এমন বেনজির সংঘাতের ঘটনায় তোপ দেগেছেন বিরোধীরা। বর্ষীয়ান সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‌২ পাতার বদলে ৫ পাতা, তার বদলে আবার ৫ পাতার চিঠি। এবার এখন ১৪ পাতার চিঠি। এটা কোনও কাজের কথা নয়। করোনা মহামারীতে মানুষ এখন অসহায়, নাজেহাল অবস্থার মধ্যে রয়েছে।’‌ এদিন রাজ্যপাল লেখেন, আপনি চিঠিতে আম্বেদকরের কথা বলছেন। আবার সংবিধানকে আপনি অবজ্ঞা করছেন। এর থেকে বড় পরিহাস আর হয় না। আপনার ব্যর্থতা ঠেকাতে চিঠিতে অজুহাত দিয়েছেন। মাইক–ঝাঁটা হাতে মুখ্যমন্ত্রীকে মানায় না। নাটক করা ছেড়ে কাজ করুন। এই চিঠির নিন্দায় সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। টুইটে তিনি লেখেন, ‘‌সবাই এখন করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যস্ত। রাজভবনের অ্যাসাইমেন্ট করার জন্য এত সময় কারও নেই। মোদী–শাহ একটা উপকার করুন। এই ভদ্রলোককে দিল্লি নিয়ে গিয়ে লকডাউনে রাখুন।’‌