বিজেপি–তৃণমূল নয়, বিকল্প বামপন্থীরাই। ব্রিগেড সমাবেশ থেকে এই বার্তাই শোনা গেল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মুখে। রবিবাসরীয় ব্রিগেড সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিকল্প নিয়েই মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষ যাঁরা নিপীড়িত হচ্ছেন তাঁদের কাছেই আমাদের পৌঁছে যেতে হবে। আসল শোষণ–বঞ্চনাকে চাপা দেওয়ার জন্যই কৌশল নেওয়া হয়েছে। আর আমাদের লড়াই তাদের বিরুদ্ধেই। রাজ্যে শিল্পের প্রসার চাই। সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। আমাদের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।’
বিজেপি আর তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব রেখে এগিয়ে যেতে সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং ভাগাভাগির রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমরা একটা বিকল্প চাই। আমরা কাজ চাই। বেকারের দাবি নিয়ে লড়াই চাই। পশ্চিমবঙ্গে যত শূন্যপদ আছে, এক বছরের মধ্যে সবটা পূরণ করা যায়, এমন একটা বিকল্প চাই বাংলায়।’
এরপরই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘রাজ্যে গণতন্ত্রের হত্যা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। এই সমাবেশের পর থেকে একদিকে তৃণমূল–বিজেপি, আর অন্যদিকে থাকব আমরা সবাই।’ আসলে বাম–কংগ্রেস–বিজেপিকে একসারিতে দাঁড় করিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই জবাব এভাবে দিলেন বিমান বসু। আরএসপি রাজ্য সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘এখন খুব শোনা যাচ্ছে খেলা হবে। খেলা–মেলা কিছু হবে না, মানুষের জয় হবে। কেন্দ্র–রাজ্য সরকার ফ্যাসিবাদী। মানুষে–মানুষে বিভাজন করছে। আমাদের লড়াই মানুষের জীবন–জীবিকা রক্ষার লড়াই। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই, এই লড়াই আমরাই জিতব।’
তৃণমূল–বিজেপিকে একবন্ধনীতে ফেলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে শ্রমিক কৃষক, মেহনতি ও অন্যান্য অগ্রসর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। শোষিত, লাঞ্চিত, বঞ্চিত হচ্ছে। তখন ওদের তরজা চলছে। তরজা গানের পার্টি একটাই। মানুষকে ভাগ করো আর শাসন করো।’ ভরে উঠেছে ব্রিগেড। এই সমাবেশ থেকেই ভোটে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করছে বাম–কংগ্রেস–আইএসএফ জোট। রবিবার ভোর পাঁচটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত শহরের ভেতরে সমস্তরকম পণ্যবাহী লরি চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। এমনকী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বর–সহ ময়দান সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায় গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।