সাত দিন ধরে মরণপণ লড়াই করেও শেষ রক্ষা হল না। বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে প্রয়াত হলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংহ।
৮ ডিসেম্বর তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ভেঙে পড়ে জেনারেল রাওয়াতের কপ্টার। সেই কপ্টার দুর্ঘটনায় আগেই মৃত্যু হয়েছে দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ- সহ ১২ জনের। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত ছিলেন গ্রুপ ক্যাপটেন বরুণ সিংহ। দুর্ঘটনায় শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার, আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিত্সার জন্য তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তামিলনাড়ুর ওয়েলিংটন থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙ্গালোরে। লড়াই চলছিল। আজ সেই লড়াই শেষ হল।
বুধবার সুলুর এয়ারবেসে সস্ত্রীক জেনারেল রাওয়াতকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ ক্যাপটেন বরুণ সিংহ। দায়িত্ব ছিল, জেনারেল রাওয়াতকে কলেজের অনুষ্ঠানে পৌঁছে দেওয়া। ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজেরই ডাইরেক্টিং স্টাফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং । কিন্তু ওয়েলিংটনে পৌঁছনোর আগেই ভয়াবহ কপ্টার দুর্ঘটনায় সব শেষ
উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ার রুদ্রপুরের বাসিন্দা বরুণ। বাবা কর্নেল কে পি সিং অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক। বরুণের ভাই তনুজ, নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার। দুর্ঘটনার পর তাঁর ছেলে জানিয়েছিলেন, বাবার শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হলেও স্থিতিশীল রয়েছে। পরে তাঁদের প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইশান আর জানিয়েছিলেন, ”আমি কর্নেল কেপি সিংয়ের (বরুণ সিংয়ের বাবা) সঙ্গে কথা বলেছি। উনি জানিয়েছেন, ওঁর ছেলে একজন যোদ্ধা এবং সে তার যুদ্ধে বিজয়ী হয়েই ফিরে আসবে।”
২০২০-র ১২ অক্টোবরে বায়ুসেনার তেজস বিমান ওড়াবার সময়, মাঝ আকাশে সেটি হঠাত্ বিগড়ে যায়। প্রায় ১০ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ধীরে ধীরে সেই বিমানকে নীচে নামিয়ে নিয়ে আসেন বরুণ। আর এই অসমসাহসিকতার জন্য গত অগস্ট মাসে, স্বাধীনতা দিবসে শৌর্যচক্রে সম্মানিত করা হয় গ্রুপ ক্যাপটেন বরুণ সিংহকে। কিন্তু, ভাগ্য এবার সেই সুযোগ দিল না। ল্যান্ডিংয়ের কিছুক্ষণ আগে হঠাত্ই বায়ুসেনার নির্ভরযোগ্য Mi-17 v5 কপ্টার আছড়ে পড়ে নীলগিরির বুকে!