কোভিডে সাহিত্য–সংস্কৃতি জগতে ইন্দ্রপতন। শঙ্খ ঘোষের প্রয়াণে একপ্রকার অভিভাবকহীন হয়ে পড়ল সাহিত্য–সংস্কৃতি সমাজ। শোকস্তব্ধ গোটা সাংস্কৃতিক মহল। শোকপ্রকাশ করে রাজ্যের মন্ত্রী তথা নাট্যকার ব্রাত্য বসু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। ছাত্র ছিলাম। ওঁনার রক্তকরবী পড়ানো এখনও মনে পড়ে। আমাদের কৈশোর, আমাদের যৌবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত শঙ্খ ঘোষ। একটা প্রজন্ম চলে যাচ্ছে। শঙ্খ ঘোষই ছিলেন শেষ যবনিকা। ক্লাস নাইনে পড়ার সময় ওঁর অটোগ্রাফ নিয়েছিলাম। বিন্দুমাত্র অহংকার ছিল না। তারপর একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। এই বাংলার প্রতীক তিনি।’
বিশিষ্ট নাট্যকার সুমন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শঙ্খবাবুকে শুধু সাহিত্যজগতের মানুষ বললে ঠিক হবে না। বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে বিশাল অবদান তাঁর। অনেক বড় মানুষকে হারালাম। শঙ্খ ঘোষ অন্যতম। তাঁর রাজনৈতিক চিন্তন, মাঠে নেমে প্রতিবাদ, সবসময় পাশে পেয়েছি। বাংলার শিরদাঁড়া বলতে যাদের বোঝায়, শঙ্খবাবু তাঁদের একজন।’
সাহিত্যিক সুবোধ সরকার জানান, খবর পেয়ে বিশ্বাস করতে পারিনি। শঙ্খ ঘোষ শুধু বাংলার কবি ছিলেন না। ভারতের কবি ছিলেন। সারা ভারতবর্ষে ওঁনার কবিতা পড়া হত। বাংলা ভাষার কবিতাকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তা বড় ব্যাপার। আমি গর্বিত ওঁনার জন্য। আমাদের কাছে, বাংলা ভাষার কাছে, ভারতের কাছে রয়ে গেলেন।
বাংলার সহস্র মানুষ অনাথ হলেন, আমিও হলাম বলে প্রতিক্রিয়া জানালেন নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের। শোকাহত বাচিক শিল্পী জগন্নাথ বসু জানান, আমি যখন বাংলা অনার্স পড়ছি। রক্তকরবী পড়তে ওঁনার বাড়ি যেতাম। রেডিও প্রোডাকশনে সুযোগ পেয়েছিলাম। গোটাটাই শঙ্খবাবুর ডিরেকশন ছিল। ঝুলন কবিতাটি আমাকে যেভাবে পাঠ করতে শিখিয়েছিলেন আজও মনে পড়ে। বেশি কথা বলতেন না। মৃদু হাসিতেই বুঝিয়ে দিতেন। বাড়াবাড়ি ছিল না।
