জেলা

শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

বাঁকুড়া তথা উত্তর ভারতের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ডিভিসির মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিভিন্ন বিভাগে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হল প্রকল্পের বন সৃজন ও সৌন্দর্যায়নের জন্য নিযুক্ত ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের শ্রমিকরা। বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সৌন্দর্যায়ন ঘটেছে এই শ্রমিকদের মাধ্যমে।

প্রায় দু’দশক আগে ডিভিসি এই কাজের বরাত দেয় রাজ্য বন দফতরের আরবান রিক্রিয়েশন ফরেস্ট্রি বিভাগকে। বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের গঙ্গাজলঘাটি রেঞ্জের বন সুরক্ষা কমিটির সদস্য পরিবার থেকে এই সব শ্রমিকরা এই কাজে নিযুক্ত হন। নিজেদের সুবিধার জন্য শ্রমিকরা ‘আরন্যক ফরেস্ট লেবার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে একটি সংগঠন গড়েন।

শ্রমিকদের মাসিক বেতন এই কো-অপারেটিভের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কিন্তু এই কো-অপারেটিভের কর্তারা দিনের পর দিন শ্রমিকদের প্রতি বঞ্চনা করছেন বলে অভিযোগ । শ্রমিকদের একাধিক ন্যায্য অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হয়ে আছেন। গত ১১ বছর ধরে এই কো-অপারেটিভ তাদের উপর এক ধরনের অপশাসন চালাচ্ছে বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন। তাদের বঞ্চনার অবসান চেয়ে তারা বিভিন্ন সময় আন্দোলনেও সামিল হয়েছেন।

বুধবার একই বিষয়ে তারা প্লেকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভ দেখান। এ বিষয়ে কো-অপারেটিভ এর দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে সেখানে কারও দেখা পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ডিভিসির এমটিপিএস বন বিভাগের সহকারী ফরেস্ট রেঞ্জার অপূর্ব বিশ্বাস বলেন, “আমি বুধবার কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছি। এবিষয়ে আমরা শ্রমিকদের কোনো মাসিক মাইনে দিইনা।ডিভিসি কাজের হিসাব অনুযায়ী পেমেন্ট করে থাকে।”

আরবান রিক্রিযেশন ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব প্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার দেবাশিস পাইন বলেন,”আমি যতদূর শুনেছি শ্রমিকরা দাবি করেছেন যেদিন কোনো শ্রমিক গরহাজির থাকলেও ডিভিসি এবং আমাদের দফতর কো-অপারেটিভ’কে সেই দিনের হাজিরার টাকা দেওয়া হয়। এরকম কোনো ব্যাপার হতে পারে না। কোনো সংস্থা গরহাজির থাকলে সেই দিনের মাইনে দেয়না। এটা শ্রমিকদের অন্যায় দাবি ।” ওই কো-অপারেটিভের এক সদস্য বলেন, “এখানে 290 জন শ্রমিক কাজ করেন। ওরা বলতে চাইছেন সারা বছরে এরকম কয়েকশ গরহাজির থাকা শ্রমিকের বেতন সোসাইটির তহবিলে জমা হয় সেই টাকা শ্রমিকদের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। কিন্তু এভাবে কোনো টাকা তহবিলে জমা পড়ে না।”

বিশেষ সংবাদদাতাঃ মলয় সিংহ,বাঁকুড়া