আবার সংবাদে সিঙ্গুর। আর তার সঙ্গে সেই বিতর্কিত জমি। যা রাজ্য– রাজনীতিতে পালাবদলের টার্নিং পয়েন্ট। এবার সেই হুগলির সিঙ্গুরে প্রায় ১০ একর জমিতে গড়ে তোলা হবে কৃষি হাব। মহালয়ার দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, সিঙ্গুরে কৃষি–ভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা হবে। বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই কী ফের সিঙ্গুরকে সামনে নিয়ে আসা হল? উঠছে প্রশ্ন।
জানা গিয়েছে, গত বুধবার সিঙ্গুরে পশ্চিমবঙ্গ কিষাণ ও খেতমজুর সংগঠনের ডাকে মেঠো প্রতিবাদ আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল। ওই কর্মসূচিতেই ফোনে কৃষকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন মমতা। এখনও পর্যন্ত সিঙ্গুরে তেমন কিছু গড়ে তোলা যায়নি। আবার শুধুমাত্র সরষে চাষ করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে গ্রামবাসীদের পক্ষে। বিরোধীরা বলতে শুরু করেছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শিল্প–বিরোধী। কৃষির নাম করে জমি আটকালেও সেখানে কোনও ফসল ফলেনি। এই পরিস্থিতি থেকে মোড় ঘোরাতেই সিঙ্গুরে কৃষি হাবের কথা বলেছেন তিনি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিঙ্গুরে কৃষি–হাব গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন স্থানীয় মানুষজন। একইসঙ্গে বাড়বে কর্মসংস্থান।’ করোনা আবহে গ্রামীণ অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়েছে। সেখানে এই প্রকল্প অর্থের মুখ দেখাবে বলে তাঁর দাবি। তাই তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্যে জানান, বিজেপি ফড়েদের নিয়ন্ত্রণ করে চাষিদের কাছ থেকে পণ্য কম দামে কিনে বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে আলু–পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সবই যদি বাংলার বাইরে চলে যায়, তা হলে দেশের মানুষ কী খাবে? বিজেপির কাছে যাবেন না।
কৃষি–শিল্পের দ্বন্দ্ব যখন স্বয়ং সরকারে দেখা গিয়েছে তখন মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি মনে করেন সিঙ্গুরে একদিকে কৃষি, অন্যদিকে হাইওয়ে ধরে শিল্প তৈরি হোক। তাতে এলাকার উন্নয়ন হবে। সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো–ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হচ্ছে। অ্যাগ্রো–প্রসেসিং কৃষিজাত পণ্য নিয়ে কাজ করবে। বহু মানুষের চাকরি হবে।
উল্লেখ্য, বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো প্রকল্পের বিরোধিতা তৃণমূলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে। সিঙ্গুরে টাটা বিরোধী আন্দোলন ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের শক্ত ভিত গড়ে দেয়। আর আসছে বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ফের সিঙ্গুর বার্তা কোন ইঙ্গিত বহন করে এখন সেটাই দেখার।