হাইকোর্টের রায়ে এবার কালীপুজোয় বাজি বিক্রি ও ফাটানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তারপরেও কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন জায়গায় বেআইনিভাবে বিক্রি হচ্ছে। তার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে আজ কলকাতা হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার।
করোনা সংক্রমণ রুখতে ছটপুজো উপলক্ষ্যে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাশ টানতে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা নিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানির সময়ই বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়য় কার্যত কড়া ভাষায় তুলোধনা করেন রাজ্য প্রশাসনকে। তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্রে বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। তাতে বাজারে বাজি পাওয়া যাচ্ছে বলে উল্লেখ রয়েছে। নুঙ্গি, চাম্পাহাটি, বড়বাজারে বাজি বিক্রি হচ্ছে। কীভাবে এটা সম্ভব? আমরা বড়জোর বলতে পারি বাজি ব্যবহার করা যাবে না। এবার রাজ্যের দায়িত্ব এটা পালন করা। পুলিশের টিম দিয়ে নজরদারি চালানো উচিত।’
মঙ্গলবার ছটপুজো উপলক্ষ্যেও প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কলকাতায় ৩৮০টি ঘাট আছে। ছট পুজোয় মানুষ সেখানে ভিড় করেন। কলকাতা ছাড়াও শিলিগুড়ি, দুর্গাপুরেও ছটপুজো হয়। কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? যে শোভাযাত্রা বের হয়, সেখানে তারস্বরে ডিজে বাজে, বাজি ফাটে। এইগুলির বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে?’
রাজ্যের কৌঁসুলি জানান, সবাইকে মাস্ক পরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তখন বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এতেই কী হয়ে যাবে? কী ধরনের প্রচার চালিয়েছে রাজ্য?’ রাজ্যের আইনজীবীকে বলতে শোনা যায়, ‘কেউ যদি বেরিয়ে যায়, কীভাবে আমরা সামলাব?’ রাজ্যের আইনজীবীর এই দায় এড়ানো মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
তখনই কড়া ভাষায় তিনি নির্দেশ দেন, ‘বুঝেছি। অর্থাৎ আপনাদের কোনও পরিকল্পনা নেই? জীবন যেখানে স্বাভাবিক নয়, সেখানে রাজ্য কী পরিকল্পনা করছে? শহরে অনেক পকেট আছে। যেমন জুট বেল্ট। যেটা নদীর পাশেই। আপনাকে সেগুলো দেখে কিছু সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। প্রচার চালাতে হবে। বলতে হবে যে অতিমারীতে এটা চালানো যাবে না।’
