জেলা

প্রকাশ্যে গুলি করে ছাত্রকে খুন!‌

বাড়ির সামনে মদ–গাঁজার আসর বসত। রোজ এই যন্ত্রণা সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। যার জন্য পাড়ার মিশুকে কলেজ ছাত্র তার প্রতিবাদ করেছিলেন। তখন থেকেই টার্গেট করা হয়েছিল ওই যুবককে। আর শনিবার সন্ধ্যায় ওই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে বাইক রাখা নিয়ে বচসা হয়। তার জেরে প্রকাশ্যে বাড়ির সামনেই খুন হতে হল ওই তরুণকে। সব যেন এক লহমায় শেষ হয়ে গেল।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত কলেজ ছাত্রের নাম মহম্মদ তৌফিক (২১)। তাঁর বাড়ি টিটাগড় উড়নপাড়ায়। শনিবার রাতে বাড়ির অদূরেই দাঁড়িয়েছিলেন ব্যারাকপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌফিক। আচমকা তিন দুষ্কৃতী এসে তাঁকে গুলি করে চম্পট দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তৌফিকের। মূল অভিযুক্ত–সহ দুই দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তবে এখনও এক দুষ্কৃতী পলাতক।
স্থানীয় বাসিন্দারা, এভাবে প্রকাশ্যে গুলি করে খুনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তৌফিক এলাকায় অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করতেন। এলাকার কিছু উঠতি যুবক তাঁর বাড়ির কাছেই রোজ মদ জুয়ার আসর বসাত। তারই প্রতিবাদ করেন ওই ছাত্র। তাঁর কাকা শামসেদ আলমের অভিযোগ, তখন থেকেই ভাইপোকে হুমকি দিত ওই দুষ্কৃতীরা। একবার ওকে মারধরও করে। টিটাগড় থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশ দু’‌জনকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায় তারা।
শনিবার সন্ধ্যায় মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোয় তৌফিক। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তখন রাস্তা দখল করে মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিল ছোট্টু ও তাঁর দুই শাগরেদ। এই নিয়ে ছোট্টুর সঙ্গে তৌফিকের একপ্রস্ত কথা কাটাকাটি হয়। তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলেও কিছুক্ষণ পরেই বাড়ি ফিরে সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন ওই ছাত্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, আচমকা ছোট্টু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বাইকে করে এসে তৌফিকের পেটে তিনটি গুলি করে পালায়। রক্তাক্ত তৌফিককে স্থানীয়রা ব্যারাকপুর তালপুকুরের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ছাত্রের বাবা হায়দর আলি বলেন, ছোট্টু নামে এলাকার এক যুবকের সঙ্গে বাইক রাখা নিয়ে বচসা হয়। তারই জেরে আমার ছেলেকে ওরা গুলি করে মেরে দিল। এই ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হলে টিটাগড় থানার পুলিশ বাহিনী যায়। প্রকাশ্যে শুটআউটের ঘটনায় বাসিন্দারা তীব্র বিক্ষোভ দেখান। রাতেই পুলিশ মূল অভিযুক্ত ছোট্টু ওরফে আরিফ ইকবাল এবং তার এক সহযোগী সুরজ আলিকে টিটাগড় থেকে গ্রেপ্তার করে। আরও একজন পলাতক।