বউবাজার থেকে পাকড়াও এক সন্দেহভাজন আফগান যুবককে। বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াই ইদগুল ওরফে আব্বাস খান নামের ওই ব্যক্তি ভারতে থাকছিল বলে অভিযোগ। শনিবার গভীর রাতে কলকাতা পুলিশের সাহায্য নিয়ে কেরল পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ইদগুলের সঙ্গে তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন কেরল পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা।
কেরল পুলিশ সূত্রে খবর, ইদগুল ২০১৮ সালে মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে কেরলে আসে। চিকিৎসার নামে এদেশে এসে সরাসরি চলে যায় এর্নাকুলামে। সেখানে আফগানদের ডেরা রয়েছে। সেখানেই সে থাকতে শুরু করে। কয়েকদিন বাদেই ইদগুল কোচি শিপ ইয়ার্ডে কাজ নেয়। কেরলে বসবাসকারী এক আফগান যুবক তাকে এই কাজ পেতে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ। কেরল পুলিশের অফিসাররা জেনেছেন, এখানে বসবাস করার সময় ইদগুল ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র জোগাড় করে। নাম পাল্টে সে আব্বাস হয়ে যায়। এই নামেই সে আধার ও ভোটার কার্ড তৈরি করে।
এমনকী ভারতীয় পাসপোর্টও তৈরি করে ফেলে সে। জাল নথি দিয়ে পাসপোর্ট তৈরির পর সে একাধিকবার আফগানিস্তানে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ফিরে আসার সময় সে সঙ্গে করে আরও বেশ কয়েকজন আফগান যুবককে নিয়ে আসে। ইদগুল ভুয়ো নথি দিয়ে তাদেরও ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র জোগাড় করে দেয় বলে অভিযোগ। কোচি শিপ ইয়ার্ডে থাকাকালীন সে ভারতীয় নৌবাহিনীর খবরাখবর জোগাড় করার চেষ্টা করেছিল। নতুন কী ধরনের যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে ভারত এবং তার নকশা কী, তা হাতানোর চেষ্টাও করছিল। যে কারণে তার প্রতি সন্দেহ বাড়ে কেরল পুলিশের। কেরলের পুলিশ অফিসাররা মনে করছেন, ভারতে থেকে সে আইএসআইয়ের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিল। পাশাপাশি তালিবান জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
ভুয়ো কাগজ দিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব জোগাড়ের বিষয়টি সামনে আসার পর তার বিরুদ্ধে এর্নাকুলাম থানায় জালিয়াতি, প্রতারণা সহ ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা করা হয়। এই খবর জানাজানি হতেই সে অসমে পালায়। কেরল পুলিস সেখানে ধাওয়া করলে মাস তিনেক আগে সে কলকাতায় চলে আসে। এই খবর পেয়ে যান কেরল পুলিসের অফিসাররা। তাঁরা বিষয়টি কলকাতা পুলিশকে জানান। কেরল পুলিশ কলকাতায় এসে পৌঁছয়। বউবাজার থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ইদগুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে কেরলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।