দুর্গতদের পাশে তিনি আছেন। আয়লা থেকে শুরু করে বুলবুল সমস্ত ঘূর্ণিঝড়েই তাঁকে দেখা গিয়েছিল গ্রামবাসীদের পাশে থাকতে। খেটো ধুতি আর হাতে লন্ঠন নিয়ে দরজায় দরজায় কড়া নাড়তেন তিনি। শোনা যেত তাঁর কন্ঠস্বর— কেউ আছিস? বেরিয়ে আয়। হ্যাঁ, তিনি প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। আজ যখন আমফান দাপট দেখাতে শুরু করেছে তখনও তাঁকে একই ভূমিকায় দেখা গেল। এবার ফের আরও একবার ত্রাণ কার্য শুরু করলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
আর একইসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে জানালেন, ‘আমাকে রাজনৈতিক উদ্ধে উঠে যেকোনও পরিস্থিতিতে পাশে পাবেন।’ রায়দিঘিতে তাঁর স্ত্রীর একটা স্কুল আছে। সেখানে ইতিমধ্যেই প্রায় হাজার জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিদেরও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আমফান। উপকূলবর্তী দীঘা, সুন্দরবনকে আমফানের রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝড়ের আগে এবং পড়ে কী কী প্রাথমিক করণীয় তাও তিনি উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে।
আর যারা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন তাদের মুখে শোনা গেল কান্তি দাদু থেকে গাঁয়ের ছেলে। এভাবেই ৮ থেকে ৮০ সবাই কান্তিবাবুর হাত ধরে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন। আর হাসিমুখে কান্তিবাবুকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘চিন্তা করছো কেন? আমি তো আছি। তোমাদের ছেড়ে কোনওদিন যাইনি, যাবও না।’ সুন্দরবন এলাকার মানুষের পাশে থেকে ফের চাল-ডাল এবং ত্রাণের অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে বাম জমানার প্রাক্তন মন্ত্রী। ত্রাণের জন্য দু–হাজার ত্রিপল, একটা নৌকা, ১০০ কুইন্টাল চাল, তিন লক্ষ টাকার ওষুধের বন্দোবস্ত করেছেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
চোখের জলে নিজের স্মৃতি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন যাঁরা দেখা গেল সেই গ্রামবাসী বৃদ্ধ–বৃদ্ধারা কান্তিবাবুর ওপর ভরসা রেখে বলছেন, ‘আমাদের গাঁয়ে তোমার মতো ছেলে ভাগ্যিস ছিল। না হলে তো ভেসেই যেতাম।’ সরকারের সহযোগিতা চেয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। সেখানে জানিয়েছেন, ফের এই দুর্যোগের পরিস্থিতিতে তিনি তৈরি রয়েছেন।