জেলা

বর্ধমানের সিরিয়াল কিলারকে ফাঁসির সাজা

তাকে নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গোটা বর্ধমান জেলাজুড়ে। একের পর মহিলাকে খুন করে ধর্ষণ করত সে। সেই সিরিয়াল কিলার বা চেনম্যান কামরুজ্জামানকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। আর তাতেই মেতে উঠল গোটা জেলা। একইসঙ্গে আতঙ্ক কমল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ খুন, ধর্ষণ করে বর্ধমানে ত্রাস তৈরি হয়েছিল সে। এসব করতে তার হাত কাঁপত না বলেই খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, আসামি কামরুজ্জামান সরকার খুনের আগে এলাকায় রেইকি করে আসত। এলাকার একাকী মহিলারাই ছিল তার টার্গেট। খুনের ছক কষে নানান অছিলায় ওই মহিলাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ত সে। এরপর প্রথমে লোহার রড দিয়ে মেরে মহিলাকে অচৈতন্য করে, গলায় চেন পেঁচিয়ে খুন করত সে। খুনের পর মহিলার বাড়ি থেকে লুঠ করত তাঁর গয়না। এভাবেই দিনের পর দিন চলছিল। স্বাভাবিকভাবেই গ্রামবাংলায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ৬ মাসে কালনা মহকুমায় ৬ মহিলা তার শিকার হয়েছিলেন। মহিলাদের ওপর তীব্র ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকেই তাঁদের খুন করত কামরুজ্জামান। এরপর ধর্ষণও করত। পুলিশকে সে গোপন জবানবন্দিতে এই কথাই বলেছিল। তার আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদে হলেও সমুদ্রগড়ের সুজননগরে সে থাকত। দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে ছিল সংসার। নেশা ছিল, নতুন বাইক কেনা ও দামি ব্র্যান্ডের পোশাক পরা। আসলে বিকৃতকাম ছিল তার মধ্যে। তবে শান্ত কামরুজ্জামান সিরিয়াল কিলার হিসেবে ধরা পড়ায় চমকে গিয়েছিল গোটা এলাকা।
উল্লেখ্য, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন বছর ১৫ আগে বড়োয়া থানার পাঁচথুপি এলাকার এক মহিলাকে সে বিয়ে করেছিল। যদিও সেই মহিলা মাত্র একমাস থাকার পর চলে যায় বাপের বাড়িতে। গত বছর ৩ জুন লালবাইক ও লাল হেলমেটের সূত্র ধরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে সিরিয়াল কিলার কামরুজ্জামান সরকার। তার বিরুদ্ধে একাধিক মহিলাকে চেন দিয়ে গলা পেঁচিয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে। এদিন তাকে ফাঁসির সাজা দিল কালনা আদালত। সোমবার কালনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল খুনি কামরুজ্জামানের সাজা ঘোষণা করেন। ফাঁসির সাজায় খুশি নির্যাতিতা ও মৃতদের পরিবারের সদস্যরা।