এই প্রথম বঙ্গে চা–চক্রে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। এর আগে বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেই বিভিন্ন জায়গায় চা–চক্রে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। একুশের নির্বাচনের আগে জনসংযোগকে সুদৃঢ় করতে এক ফোঁটা সুযোগও হাতছাড়া করতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। তাই বেছে নিলেন একটি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাকেই। খড়্গপুর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ধাদবি গ্রামে চা–চক্রে যোগ দিলেন তিনি। সেখান থেকে রাজ্যকে তুলোধোনা করে আশ্বাস দিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যবাসীর সমস্ত সমস্যা মিটবে। আত্মবিশ্বাসী কন্ঠে বললেন, ‘বাংলায় পদ্ম চাষ হবেই।’
এখানে চা–চক্রের আয়োজন করার পেছনেও একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। কারণ এই গ্রামটি মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। মঙ্গলবার নাড্ডা যেখান থেকে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করেন, সেটিও মূলত আদিবাসী এলাকাই। সুতরাং আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক ধরতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। এখানে চা–চক্রে যোগ দেন নাড্ডা। এখানে তিনি বলেন, ‘এত সকালে আপনারা এসেছেন, আমি কৃতজ্ঞ প্রত্যেকের কাছে। মমতাদির এত গোঁসা কেন? পিসি–ভাইপোর গুণ্ডামি আর চলবে না বাংলায়। মমতাদিদিকে এবার চলে যেতেই হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই রাজ্যবাসী ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না।’
একুশের নির্বাচনকে মাথায় রেখে জঙ্গলমহল–সহ আদিবাসীদের ভোটকে ঝুলিতে পুরতে মরিয়া বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনে যা ফল হয়েছিল, তাকে আরও দ্বিগুণ করতে প্রত্যেকটি পদক্ষেপও বেছে করছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যাহ্নভোজ রাজনীতি থেকে শুরু করে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা আর নয়া সংযোজন চা–চক্রের আসর বলে মনে করা হচ্ছে। একুশের নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, তৃণমূল-বিজেপি দ্বন্দ্ব যেন ততই বাড়ছে। বিনা লড়াইয়ে একে অপরকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও রাজি নন কেউ। একদিনে বাংলা দখলের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। অন্যদিকে আবারও মসনদে বসার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে শাসকদল। কিন্তু আমজনতা কি তৃণমূলকে সরিয়ে বিজেপির হাতে তুলে দেবে বাংলার ভার? নাকি ফের মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই? ভোটবাক্সে মিলবে উত্তর।