দেশ লিড নিউজ

রাজ্যে লুকিয়ে ১৫ জন জেএমবি জঙ্গি!‌

রাজ্যে ঢুকেছে আরও ১৫ জন জঙ্গি। মূলত সংগঠনে ক্যাডার নিয়োগ, ঝিমিয়ে পড়া স্লিপার সেলের পুনরুজ্জীবন এবং তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়েই তারা সীমান্ত পেরিয়েছে। রবিবার দুপুরে গ্রেপ্তারির পর জেরা পর্বে কলকাতা পুলিশের এসটিএফকে এই তথ্য জানিয়েছে নাজিউর, রবিউল এবং সাবির। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এরাই গা–ঢাকা দিয়েছিল।

জেরায় জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল–মে মাসে মালদহ জেলায় ‘রিক্রুটমেন্ট ড্রাইভ’ চালিয়েছে নাজিউর ও তার দলবল। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আসা ‘ইন্টেল’ অনুযায়ী, শুধু জেএমবি নয়, ও দেশের মাথাব্যথার আরেক কারণ ‘হেফাজতে ইসলাম’–এরও নজর পড়েছে এপারে। দুই জঙ্গি সংগঠন মিলিয়ে কমপক্ষে ৫০ জন জামিনের পর ওপার থেকে বেপাত্তা। তারা পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে আশ্রয় নিতে পারে। কারা কারা নিখোঁজ, তার একটি তালিকাও এসেছে এপারের গোয়েন্দাদের হাতে।

কার মাধ্যমে এবং কীভাবে হরিদেবপুরে আস্তানা গেড়েছিল নাজিউররা? এসটিএফ সূত্রে খবর, বসিরহাটের অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে দালালের হাত ধরে এপারে আসে নাজিউররা। এরপর সেলিম নামে এক ‘লিঙ্কম্যান’-এর মাধ্যমে তারা কলকাতায় পা রাখে। এসটিএফের দাবি, হরিদেবপুরে থাকা আরেক বাংলাদেশি খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তার নাম সেলিম মুন্সি। ছাতা সারাইয়ের কারবার রয়েছে এই ব্যক্তির।

 

এই সেলিমই বাড়িভাড়া থেকে শুরু করে ভারতীয় পরিচয়পত্র জোগাড় করে দেওয়ার মতো যাবতীয় ‘লজিস্টিক সাপোর্ট’ দিয়েছিল জঙ্গি দলটিকে। হরিদেবপুরে মাসে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে দু’টি পৃথক ঘর ভাড়া নিয়েছিল নাজিউররা। তার একটিতে ফল ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে থাকত সাবির। অন্যটিতে নাজিউর আর রবিউলের সঙ্গে থাকত সেলিম নিজে।

নাজিউরের কাছে থেকে জেএমবি সংক্রান্ত নানা তথ্য এবং একটি ডায়েরি পেয়েছেন এসটিএফ আধিকারিকরা। পেয়েছেন একটি লিফলেটও। ডায়েরিতে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের বেশ কয়েকটি মোবাইল নম্বরও রয়েছে। এসটিএফ সূত্রে খবর, নম্বরগুলি লেখার ক্ষেত্রে কারসাজি করা হয়েছে। ফলে ডায়াল করার সময় দেখা যাচ্ছে, সেগুলির কোনও অস্তিত্ব নেই। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের নজর এড়াতেই তাতে সাঙ্কেতিক সংখ্যা ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।

নাজিউর রহমান পাভেল বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই সে যে ফের জঙ্গি সংগঠনের সংস্রবে এসেছে, তা জানা গিয়েছে রবিবার হরিদেবপুরে গ্রেপ্তারির পর। তার মতোই জেল থেকে বেরিয়ে বেপাত্তা সাতক্ষীরার আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহের মহাফুজুর রহমান, চট্টগ্রামের সালাউদ্দিন হোসেন ভুঁইঞা, আব্দুল আজিজ ওরফে খলিলের মতো কট্টর জেএমবি জঙ্গি এবং হেফাজতে ইসলামের কট্টরবাদীরা।