বিধানসভা নির্বাচনের পর ঝড়ের গতিতে ভেঙেছে বঙ্গ বিজেপির সাধের ঘর। ভাঙছেও। পাশাপাশি ঘরের কাহিনী বাইরে এসেছে। আসছেও। দলীয় কোন্দল এখন দিনের আলোর মত স্পষ্ট। যদিও রাজনীতির অলিন্দে এসব একেবারেই নতুন নয়।
তথাপি এবার বঙ্গ বিজেপির কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছেন জয়প্রকাশ মজুমদার এবং রীতেশ তিওয়ারি। অতি সম্প্রতি দল বিরোধী কাজের জন্য দুজনকেই শো‘কজ করে বিজেপি কিন্তু তাঁদের জবাবদিহির আগেই চরম সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল জয়প্রকাশ মজুমদার এবং রীতেশ তিওয়ারিকে।
গোটা ঘটনায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দলের ভেতর–বাইরের কথা, কখন–কোথায়–কোন কথা বলা যাবে কিংবা বলা যাবে না ইত্যাদি বিষয়ে একটি মত প্রকাশও করেছেন।
তবে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর সংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মঙ্গলবারই দলের বিরুদ্ধে বোমা ফাটালেন জয়প্রকাশ ও রীতেশ। জয়প্রকাশের কথায়, বাংলার বিজেপিকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে দলই। পাশাপাশি রীতেশ বলেন, বিধানসভা ভোটের পর একাধিক বিজেপি নেতা কর্মীদের পাশে না দাঁড়িয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যস্ত ছিলেন। গোপনে শাসক দলের সাথে যোগসাজসে নিজের আখের গুছিয়েছেন।
কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। বার বার তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তিনি। দল থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর জয়প্রকাশ ও রীতেশের মুখে মমতার স্তুতি তথা যারপরনাই প্রশংসা উঠে এসেছে। জয়প্রকাশ মমতাকে ভারতের অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও বলে অভিহিত করেছেন। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, জয়প্রকাশ ও রীতেশ কি এবার তৃণমূলে পা বাড়াতে চলেছেন? গতকালের সাংবাদিক বৈঠক করে জয়প্রকাশ–রীতেশ যে সেপথ কিছুটা সুগম করে রাখলেন সেকথা বলছেন অনেকেই।
প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনুর সাথে ক‘দিন আগেই দলের নির্দেশ ছাড়াই বিক্ষুব্ধ জয়প্রকাশ, রীতেশ রুদ্ধদ্বার বৈঠক সারেন। সেক্ষেত্রে দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে শান্তনুকে কেন শোকজ বা বরখাস্ত করা হল না? মতুয়া ভোটের কথা ভেবে কী বিজেপি ঝি কে মেরে বউকে শিক্ষা দিতে চাইছে? উত্তর দেবে সময়ই।