দেশ লিড নিউজ

‌দিল্লিতে বৈঠকের পর বিস্ফোরক রাজ্যপাল

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পরই রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তোপ দাগলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী–সহ রাজ্য প্রশাসনের নিন্দায় সরব হলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‌আমি সমালোচনায় বিশ্বাস করি না। আমি পুনর্গঠনে বিশ্বাস করি।’‌
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‌পশ্চিমবঙ্গে বোমার কারখানা চলছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয়। সংবিধান এবং আইনকে অবজ্ঞা করে পশ্চিমবঙ্গে রাজত্ব চলছে।’‌ যদিও এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কী ব্যাপারে তাঁর আলোচনা হল তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি রাজ্যপাল। তবে তিনি বারবার সংবাদমাধ্যমের কাছে এদিন একটাই আবেদন জানান। তাঁর মতে, ‘‌পশ্চিমবঙ্গে কী হচ্ছে তা জানা উচিত দেশের সংবাদমাধ্যমের।’‌ তাঁর প্রশ্ন, ‘‌পশ্চিমবঙ্গের মতো আর কোনও রাজ্য আছে কিনা যেখানে আইপিএস, আইএএস–রা রাজনৈতিক ভৃত্য হিসেবে কাজ করেন।’‌
রাজ্যপাল বলেন, ‘‌অমিত শাহের সঙ্গে এদিনের বৈঠকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাজ্যের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কয়েকটি বিষয় এবং অন্যান্য আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে নৈরাজ্য চলছে। আইনের শাসন বলে কিছু নেই। পুলিশ–প্রশাসন শাসকদলের কর্মী হিসেবে কাজ করছে।’‌ সূত্রের খবর, রাজ্যপাল দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা, অনাচার চলছে। অথচ ঘুমিয়ে রয়েছে সর্বোচ্চ প্রশাসন। ‌পশ্চিমবঙ্গে যা হচ্ছে তা সংবিধানে উল্লেখ করা গণতন্ত্রের বিপরীত। রাজ্যে সংবিধান ভেঙে পড়ছে বলে জানিয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলাম। জানিয়েছিলাম যে এই পরিস্থিতি আমাদের একত্রিত হয়ে সামলানো উচিত। কিন্তু উত্তর পাইনি। ডিজিপি–র কাছে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে জবাবদিহি চেয়েছিলাম। কিন্তু ওদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠি পেলাম। ডিজিপি–র হয়ে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী!‌ এর আগেও এই ঘটনা ঘটেছিল। তখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার। আর এবার কী হল?‌ মৃত্যু হল মণীশ শুক্লার।
তবে তাঁর কথায়, ‘‌এখানে সুষ্ঠুভাবে কীভাবে নির্বাচন হবে তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। ‌আমি পশ্চিমবঙ্গে স্বাধীন ও ভয়মুক্ত নির্বাচন হোক তা নিশ্চিত করতে চাই। মানুষ অন্তত এটুকু আশা করে গণতন্ত্রের থেকে।’‌ দার্জিলিংয়ে একমাস গিয়ে থাকার ব্যাপারে এদিন এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলে খানিক বিরক্ত হন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‌আমি কি কোনও দোষ করছি দার্জিলিংয়ে গিয়ে?‌ এর আগেও অন্যান্য রাজ্যপাল গিয়েছিলেন। আমি নিজেই তিনবার গিয়েছি সেখানে।’‌