করোনা আবহেও রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাত লেগেই রইল। আর এখন তার মাধ্যম হয়েছে টুইটার। আর রাজ্যপালের টুইট মানেই জোরালো বিতর্কের বিস্ফোরণ। রাজ্যের সমালোচনায় সিদ্ধহস্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। রাজ্যের নেতা–মন্ত্রীরাও তাঁকে আক্রমণ করতে পিছপা হন না। কখনও পদ্মপাল, তো কখনও অপমানিতপাল বলে থাকেন। কিন্তু এবার রাজ্যপালের দুটি টুইট শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
কী সেই টুইট? একটি টুইটে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে সরাসরি সরকারি আমলাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কেমন চলছে রাজ্যপাট! শীর্ষ পদে থাকা আমলাদের একাংশ আগুনের গোলা নিয়ে খেলছেন। রুলস অব বিজনেসের ১৬৬(৩) ধারা অবজ্ঞা করা হচ্ছে। মমতার প্রশাসন ও পুলিশ ‘উচ্ছন্নে যাওয়া বাচ্চাদের’ মতো আচরণ করছেন।’ এই টুইট পাতে পড়তেই রাজ্য–রাজনীতিতে বিতর্ক শুরু হয়েছে। শিক্ষিত আমলাদের এই কথা বলা যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী রাজ্যপালের পদে বসে এই কথা বলতে পারেন কিনা তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
রাজ্যপালের এই টুইটে সরকারের কোন প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও রাজ্যে শিল্প সম্মেলন নিয়ে জগদীপ ধনকারের টুইটের প্রতিবাদ করেছে শাসক দল। গত কয়েকবছর ধরে শিল্প সম্মেলন করছে রাজ্য সরকার। এবার এই মেগা–সামিট আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকেই শিল্প সম্মেলন প্রসঙ্গে বিস্তারিতভাবে জানাতে বলেছিলেন রাজ্যপাল। শিল্প সম্মেলন নিয়ে রাজ্যপালের টুইট, ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট(শিল্প সম্মেলন) নিয়ে মমতা সরকারের অর্থ সচিবের জবাব পেলাম না। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের কাছেই শিল্প সম্মেলনের বিস্তারিত জানতে চেয়েছি।’
শিল্প সম্মেলনে আসা লগ্নি ও খরচ নিয়ে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে জানাতে বলেছেন রাজ্যপাল। টুইটে তিনি লিখছেন, ‘আমার আশা, অর্থ এবং শিল্পমন্ত্রী তাঁর সাফল্য আনন্দ ও গর্বের সঙ্গে জানাবেন। শিল্প সম্মেলনের খরচ, রাজ্যে আসা লগ্নির চেয়ে বেশি হয়ে যায়নি তো? না হলে রাজ্যপালের কাছে গোপন করার কী আছে? তথ্য দিতে দেরি থেকেই বোঝা যাচ্ছে ধামাচাপা দেওয়ার কিছু আছে।’ এই টুইটের পাল্টা তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারকে বাণিজ্য সম্মেলন বুঝতে বাজেট বই পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। শিল্প সম্মেলন নিয়ে তথ্য তলব করায় রাজ্যপালকেসৌগত রায় বলেন, ‘উনি বাজেটটা ভালো করে দেখলেই সব বুঝতে পারবেন।’