বিনা দোষে তাঁকে বদনাম দেওয়া হয়েছিল। আর তা থেকে মুক্তি পেতে লড়াই করতে হয়েছিল টানা ২৪ বছর। অবশেষে সত্যের জয় হল। হ্যাঁ, দেশের এক সেরা বিজ্ঞানীর সঙ্গে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল চর তকমা। তারপর ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায় তিনি মুক্তি পান। কিন্তু এতবড় কাণ্ডের জন্য তাঁর ভাবমূর্তিতে যেভাবে কালিমালিপ্ত হয়েছিল তার কী হবে! আদালতের দ্বারস্থ হন ইসরোর বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণ।
আদালত সূত্রে খবর, চরবৃত্তির অভিযোগে ১৯৯৪ সালে বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণকে গ্রেপ্তার করেছিল কেরল পুলিশ। এমনকী দু’মাস জেলেও থাকতে হয় তাঁকে। পরে মামলা সিবিআইয়ের হাতে গেলে ছাড়া পান নাম্বি নারায়ণ। শুরু হয় তাঁর আইনি লড়াই। টানা ২৪ বছর পর ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, নাম্বির বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় ক্ষতিপূরণ বাবদ নাম্বিকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট গোটা ঘটনার পর্যবেক্ষণ করে জানায়, নাম্বিকে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তা অনেক কম। তিনি নিম্ন আদালতে আবেদন করতে পারেন। সেইমতো নিম্ন আদালতে যান নাম্বি। তখন মামলা চলার সময়েই কেরল সরকার নাম্বির সঙ্গে সমঝোতায় আসতে চায়। সরকার তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসে ঠিক করে কেরল পুলিশের ওই ন্যক্কারজনক কাজের জন্য বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণকে ১.৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এদিন ক্ষতিপূরণের সেই চেক নাম্বির হাতে তুলে দেয় পিনারাই বিজয়ন সরকার।
নাম্বি নারায়ণ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এই ক্ষতিপূরণ পেয়ে আমি খুশি। এই লড়াই শুধু টাকার জন্য নয়। একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি লড়াই করেছি।’ নাম্বি নারায়ণের বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে অভিযোগ ওঠে নাম্বি নারায়ণ ও ইসরোর অন্য এক বিজ্ঞানী ক্রায়োজেনিক রকেট টেকনোলজির নথি শত্রু দেশের হাতে তুলে দিয়েছেন। তখন নাম্বি দাবি করেছিলেন, রকেটের তরল জ্বালানীর প্রযুক্তি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চর–কাণ্ড আসলে একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। কিন্তু পুলিশ সে কথা না শুনে গ্রেপ্তার করেছিল।
