আর্থিক দিক অনগ্রসর মেয়েদেরই টার্গেট করছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। বিভিন্ন রাজ্য থেকেই মহিলাদের দলে টানার চেষ্টা করছে তারা। লক্ষ্য, মহিলা আত্মঘাতী বাহিনী তৈরি করা। আইএসআই এই কাজের দায়িত্ব দিয়েছে আইএসের বাংলাভাষী ইউনিটকে। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে লস্কর ও জয়েশের মতো জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। বাংলাদেশে বসে গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এই তথ্য জানিয়েছে।
নয়াদিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল পাক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছয় জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জেরা করে জানা যায়, পাকিস্তানের ঠাট্টায় তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ওই শিবিরেই এক সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলায় অভিযুক্ত আজমল কাসভ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ঠাট্টায় বেশ কয়েকজন মহিলা জঙ্গিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতীয় মহিলাও রয়েছে। তাদের স্লিপার সেল তৈরির কাজে লাগানো হবে।
বাংলাদেশ ও ভারতে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের যুক্ত এমন কয়েকজনের টেলিফোনে আড়ি পেতে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ভারতে ঘন ঘন নাশকতার ফন্দি আঁটছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। এই কাজে বাংলাদেশে আইএসের যে বাংলাভাষী ইউনিট রয়েছে ও কাশ্মীরে লস্কর–ই–তৈবার যে সংগঠন রয়েছে, তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। তরুণীরাই তাদের টার্গেট।
এই তরুণীদের মধ্যে যারা একটু উচ্চশিক্ষিত, তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সংগঠনের আদর্শ প্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকী, নতুন সদস্য জোগাড়ের কাজও তাদের দিয়ে করানো হচ্ছে। যে সব তরুণীর আবার কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি রয়েছে, তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে নতুন নতুন বিস্ফোরক তৈরির কাজে। ভারতের কম্পিউটার ব্যবস্থার মূলে আঘাত করাই আইএসআইয়ের লক্ষ্য। গোটা সিস্টেমকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে চায় তারা।
আসলে মহিলাদের নিয়ে স্লিপার সেল তৈরির পিছনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য রয়েছে আইএসআইয়ের। গত কয়েক বছরে একের পর জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে এদেশে। তারা সকলেই পুরুষ। তাই নিরাপত্তা বাহিনীর সন্দেহ এড়াতে মহিলাদের দিয়েই স্লিপার সেল ও আত্মঘাতী বাহিনী তৈরির পথে হাঁটছে আইএস বা লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি। তাদের দিয়ে গোপনে কাজ করানোর পাশাপাশি সেনা বা বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার ভিতরের খবর জানতে হানিট্র্যাপ হিসেবেও ব্যবহারের ভাবনা রয়েছে তাদের।