দেশ

‘জিরো বেসড টাইম টেবিল’ চালু করেছে রেল, ব্যাপারটা কী?

জিরো বেসড টাইম টেবিল, অর্থাৎ ট্রেনের টাইম টেবিল নির্দিষ্ট থাকবে না। কি শুনতে অবাক লাগছে তো? এমনই পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতীয় রেল। শীঘ্রই এই টাইম টেবিল চালু করতে চায় রেল কর্তৃপক্ষ। ব্যাপারটা ঠিক কী? রেলকর্তাদের বক্তব্য, “লাভ হোক বা না হোক, ক্ষতি যেন না হয়”, এই ধরণের চিন্তা থেকেই জিরো বেসড টাইম টেবিলের ভাবনা। যদিও এই ভাবনায় সিলমোহর আগেই পড়েছিল, এবার হাতে কলমে কাজ শুরু করে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

 

ধরুন দূরপাল্লার কোনও ট্রেন একটি স্টেশনে দাঁড়াবে, তবে তাতে রেলের খরচ কত? শুনলে অবাক হয়ে যাবেন, একটি দূরপাল্লার ট্রেন কোনও একটি স্টেশনে দাঁড় করাতে রেলের খরচ হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ডিজেল ইঞ্জিনে চালিত ট্রেনের খরচ স্টেশন প্রতি ৩০ হাজার, আর ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে সেটা কম। এবার দেখতে হবে ওই স্টেশনে কত যাত্রী ওঠানামা করছেন। অর্থাৎ ওই স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ালে টিকিট বিক্রি থেকে কত লাভ হচ্ছে রেলের। যদি দেখা যায় যে ট্রেন দাঁড় করানোর খরচ উঠছে না টিকিট বিক্রির টাকায়, তবে ওই স্টেশনে ট্রেনটি আর দাঁড়াবে না। এটাই হল জিরো বেসড টাইম টেবিল।

 

সূত্রের খবর, এবার পাটিগণিতের হিসেব কষছেন রেলকর্তারা। একেকটি স্টেশন থেকে কোন কোন ট্রেনের লাভ কত হচ্ছে সেটার চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। যদি দেখা যায়, কোনও ট্রেনের যাত্রাপথে কোনও স্টেশন ক্ষতির বোঝা বইছে, তবে সেই স্টেশনটি ছেঁটে ফেলা হবে। অর্থাৎ ওই ট্রেনটি আর সেই স্টেশনে দাঁড়াবে না। এতে রেলের খরচ ও সময় দুটোই বাঁচবে।

 

রেলকর্তাদের দাবি, বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক কারণে বা সাংসদ-বিধায়কদের দাবিতে একেকটি দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপেজ বাড়াতে হয়েছিল। যে ক্ষতির বোঝা বাড়িয়ে চলেছে রেলের। এবার সমস্ত স্টপেজের আয়-ব্যয়ের হিসেব নিকেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রেল জোনগুলিকে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাড়ানো স্টপেজগুলির জন্য রেলের গতিও অনেক কমেছে, যার খেসারত গুনতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। একটি দূরপাল্লার ট্রেনকে কোনও একটি স্টেশনে দাঁড় করাতে গেলে স্টেশন আসার আগে গতি কমানো থেকে স্টেশন ছাড়ার পর পূর্ণ গতি অর্জন করা পর্যন্ত মোট আট মিনিট সময় নষ্ট হয়। আর বিদ্যুৎ বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক হিসেবে রেলের খরচও হয় ২০-৩০ হাজার টাকা (একটি ট্রেনের ক্ষেত্রে)। এবার সেটাই কমাতে চাইছে ভারতীয় রেল। করোনা অতিমারীর জন্য জিরো বেসড টাইম টেবিল লাগু করতে এমনিতেই দেরি হয়েছে রেলের। জানা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই এই নতুন টাইম টেবিল চালু করতে তৎপর রেলমন্ত্রক।