রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম সাধারণ সভার বক্তৃতায় এবার সরাসরি ধর্মীয় তাস খেলে দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্রতিবাদে সভা থেকে ওয়াকআউট করে ভারত। তার কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো ভিনিতো বলেন, ‘গত ৭০ বছরে বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের গৌরব তুলে ধরার মতো বিষয়গুলি হল– সন্ত্রাসবাদ, জনজাতির নির্মূলিকরণ, মৌলবাদের বাড়বাড়ন্ত এবং গোপন পারমাণবিক বাণিজ্য।’
ইটের আঘাতে যে পাকিস্তানকে এভাবে পাল্টা পাটকেল খেতে হবে তা ভাবতে পারেননি ইমরান খান। পাক প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে নাৎসি পার্টির সঙ্গে তুলনা করলেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংস থেকে শুরু করে গুজরাট দাঙ্গা, দিল্লির সংঘর্ষ, একের পর এক উদাহরণ তুলে, ভারতে মুসলিমরাই নির্যাতনের শিকার বলে বার্তা দিতে চান তিনি।
তখনই রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি ওয়াকআউট করেন, যাকে চরম কূটনৈতিক প্রতিবাদ হিসেবেই দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল। পরে টুইটারে তিরুমূর্তি লেখেন, কূটনৈতিক অধঃপতনে নতুন স্তরে পৌঁছল পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা। তা মিথ্যা, ব্যক্তিগত আক্রমণ, যুদ্ধবাজ মনোভাবে পরিপূর্ণ। পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের দুর্দশা, সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদের মতো বিষয়গুলি অন্ধকারেই রয়ে গেল।
ইমরান খানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, জম্মু–কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে আইন ও প্রশাসনিক ইস্যু একান্তভাবেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বর্তমানে কাশ্মীরের একমাত্র সমস্যা হল যে, এর কিছুটা অংশ পাকিস্তান বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছে। উল্লেখ্য, শনিবার সাধারণ সভায় বক্তৃতা দেওয়ার কথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সেখানে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে তিনি পাকিস্তানকে তুলোধনা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এরপর মিজিতো ভিনিতো বলেন, ‘এই সভাকক্ষকে এমন এক ব্যক্তির ভুলভাল বক্তব্য শুনতে হল যার নিজের কিছুই প্রদর্শন করার মতো নেই। তার বদলে আমরা দেখতে পাচ্ছি মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, ভুয়ো তথ্য, যুদ্ধ–মনোভাবের মতো বিষয় ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে এই সভাকক্ষে। গত ৭০ বছরে এই দেশের বিশ্বকে বলার মতো গৌরব হল সন্ত্রাসবাদ, জনজাতির নিমূলীকরণ, মৌলবাদ এবং গোপনে পারমাণবিক বাণিজ্য। এই দেশটিকে রাষ্ট্রপুঞ্জ সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে চিহ্নিত করেছে।’
