পিএনবি কেলেঙ্কারি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মেহুল চোকসিকে ভারতে ফেরানোর সম্ভাবনা জোরালো হল। মেহুল চোকসি মামলার পরবর্তী শুনানির আগেই ভারত থেকে বিমান পৌঁছল ডোমিনিকায়। অ্যান্টিগা সরকারের পূর্ণ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মেহুলকে দেশে ফেরানো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ডোমিনিকা থেকে সরাসরি ফেরার হীরে ব্যবসায়ীর ভারতে ফেরা নিয়ে এখনও রীতিমতো সংশয় রয়েছে। অন্তত আগামী ২ জুন পর্যন্ত তাঁর দেশে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
স্থানীয় সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, ডগলাস চার্লস বিমানবন্দরে ভারত থেকে একটি ব্যক্তিগত বিমান নেমেছে। তবে সেই বিমানে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ ডোমিনিকা গিয়েছেন কিনা সেই সম্পর্কে কোনও নিশ্চিত খবর মেলেনি। অ্যান্টিগা সরকার ভারতের পাশে। তাঁরা চাইছে চোকসিকে তাঁদের দেশে না ফিরিয়ে সরাসরি ফেরানো হোক ভারতে। কারণ অ্যান্টিগায় গেলেই সেদেশের নাগরিক হওয়ার সুবাদে আইনি সুরক্ষা পেয়ে যাবেন চোকসি। তাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে হীরে ব্যবসায়ীর প্রত্যর্পণের কাগজপত্র ডোমিনিকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সিবিআই এবং ইডির তরফে চোকসির বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ আছে, সেই সব অভিযোগের নথি ডোমিনিকায় পাঠানো হয়েছে।
পিএনবি কেলেঙ্কারি কাণ্ডে অন্যতম মূল অভিযুক্ত নীরব মোদীর মামা মেহুল চোকসি। ২০১৮ সালে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন মেহুল। অ্যান্টিগা সরকার পলাতক হিরে ব্যবসায়ীকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার কথা শুরু করতেই অ্যান্টিগা ছেড়ে কিউবা পালানোর পরিকল্পনা করেন মেহুল। তাই বোটে ডোমিনিকা পৌঁছন। ২৭ মে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডোমিনিকার পুলিশ। বেআইনিভাবে দেশে প্রবেশের কারণে চোকসির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ডোমিনিকা আদালত বুধবার পর্যন্ত তাঁর প্রত্যপর্ণে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। পিএনবি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত এই হিরে ব্যবসায়ী ভারত ছেড়ে যাবার পর অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নিয়েছেন। তাই চোকসির আইনজীবী বিজয় আগরওয়ালের দাবি, ভারতের বাসিন্দা না হওয়ায় ডোমিনিকা কোনওমতেই তাদের মক্কেলকে ভারতের হাতে প্রত্যপর্ণ করতে পারবে না। ডোমিনিকা প্রশাসন অ্যান্টিগার হাতেই তুলে দিতে চায় মেহুল চোকসিকে।
ডোমিনিকার আদালতের নির্দেশে ২ জুন পর্যন্ত সেখানকার পুলিশের হেফাজতে আছেন হীরে ব্যবসায়ী। আগামী বুধবার তাঁকে ফের আদালতে পাঠাতে হবে। সূত্রের খবর, বুধবারের শুনানিতে ভারত সরকার প্রমাণ করার চেষ্টা করবে মেহুল চোকসি সত্যিই ভারত থেকে পলাতক এবং তাঁর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ আছে। সেক্ষেত্রে ভারতের পক্ষে চোকসিকে দেশে ফেরানো সহজ হবে। সিবিআইয়ের অনুরোধে তাঁর বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল। কিন্তু অ্যান্টিগার সঙ্গে ভারতের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। সেই সুবিধে নিতেই অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নিয়েছেন চোকসি। তবে ওই দ্বীপরাষ্ট্রের আইনে কমনওয়েলথ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিতে পলাতক প্রত্যর্পণের ধারা রয়েছে। তার উপর ভিত্তি করেই মেহুল চোকসিকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছে ভারত।