ইতিহাসে প্রথমবার, সরকারিভাবে মন্দায় প্রবেশ করতে চলেছে ভারতীয় অর্থনীতি। এই চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে। লকডাউনের জেরে দেশজুড়ে বন্ধ হয়েছিল আর্থিক কর্মকাণ্ডের চাকা। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও সম্ভবত দেশের আর্থিক হাল ফিরছে না বলে আরবিআই–এর আর্থিক নীতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে। বরং অর্থনীতির বেহাল দশা দেশকে নজিরবিহীন মন্দার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
লকডাউনের জেরে এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকে প্রায় ২৩.৯ শতাংশ পড়ে গিয়েছিল দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন তথা জিডিপি। এরপর আনলক পর্ব শুরু হওয়ায় মনে করা হচ্ছিল ভারতীয় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। আরবিআই–এর প্রকাশনায় লেখা হয়েছে, ‘দেশের ইতিহাসে প্রথমবার ২০২০–২১ অর্থবর্ষের প্রথম অর্ধে মন্দার কবলে পড়েছে ভারত।’ যেখানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, জুন থেকে সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে কিছুটাও বৃদ্ধির সত্ত্বেও জিডিপি’র পতন অব্যাহতই ছিল। এবার শতাংশের হিসাবে ৮.৬।
তবে উৎসবের মরসুমে অর্থনীতির চাকা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। বিক্রিবাটা কমলেও ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটায় বিভিন্ন সংস্থার অপারেটিং লাভ বেড়েছে। ব্যাঙ্কের নগদের পরিমাণ, গাড়ি বিক্রির পরিসংখ্যান অক্টোবর মাসে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে মনিটারি পলিসির দায়িত্বে থাকা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্রের নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল নিজেদের রিপোর্টে মন্দার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। ওই রিপোর্টেই বলা হয়েছে, ‘ভারত ২০২০–২১ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে টেকনিক্যাল রিসেশন অর্থাৎ মন্দায় প্রবেশ করেছে।’
তবে মূল্যবৃদ্ধির চাপ ও অপ্রত্যাশিত মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতিতে হস্তক্ষেপের জেরে বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্টের ঝুঁকি রয়েছে বলে আরবিআই’র বুলেটিনে লিখেছেন অর্থনীতিবিদরা। সরকারিভাবে রিপোর্টটি এখনও প্রকাশ করা হয়নি। আগামী ২৭ নভেম্বর তা প্রকাশিত হওয়ার কথা। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সেটিকে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, ইতিহাসে প্রথমবার মন্দা শুরু হল দেশের অর্থনীতিতে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন পদক্ষেপ ভারতের আসল শক্তিকেই তার দুর্বলতায় পরিণত করেছে।