তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কী লাগতে চলেছে? এই প্রশ্নই এখন উঠতে শুরু করেছে। কারণ একদিকে নতুন কাঠামো নির্মাণ অবিলম্বে চিনকে বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিল ভারত। সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা প্রশমন করতে হলে গলওয়ানকে নিজের জমি দাবি করা বন্ধ করতে হবে। এই স্থিতাবস্থার বদল ঘটাতে চাইলে শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে বলে শনিবার কড়া ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শি জিনপিংয়ের দেশকে।
অন্যদিকে পূর্ব লাদাখে ভারত–চিন দু’পক্ষই সেনা বাড়ানোয় এমনিতেই চরম উত্তেজনা রয়েছে। যদি আমেরিকা ভারতের পাশে দাঁড়ায় তা হলে অবধারিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যাবে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিন সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বেজিংয়ে অবস্থিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিশ্রি। ওই সাক্ষাৎকারেই তিনি জানান, পূর্ব লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সামরিক বিরোধ নিষ্পত্তির রাস্তা একটাই, তা হল বেজিংকে পরিষ্কার করে বুঝতে হবে যে, গায়ের জোরে স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করতে চাওয়া কোনও কাজের কথা নয়। তা করে এগনোও যাবে না।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, তা বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলিও বুঝছে। কিন্তু কেউ প্রকাশ্যে চিনকে তার আগ্রাসন নিয়ে কিছু বলছে না। রাশিয়া এখনও পর্যন্ত মুখ বন্ধই রখেছে। গলওয়ান সংঘাতের পর ভারত–চিন দু’পক্ষকে নিয়ে বসার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যায় রাশিয়া। কারণ না ভারত–না চিন কেউ তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপে রাজি হয়নি। ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিশ্রি বলেন, গলওয়ানকে নিজেদের জায়গা বলে যে দাবি করে আসছে চিন, তা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। চিন যদি নিজের মানসিকতা না বদলায়, সমস্যা থেকেই যাবে। চিন যদি স্থিতাবস্থা পাল্টানোর চেষ্টা করে, তাহলে বৃহত্তর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এই চরম হুঁশিয়ারিতে চিন বেশ চাপেই পড়েছে বলে খবর। কারণ ভারতের পাশে আমেরিকা দাঁড়ালে, সেক্ষেত্রে পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া দাঁড়াবে চিনের পেছনে। ভারত–চিন যুদ্ধ যদি শেষ পর্যন্ত বাধেই সেক্ষেত্রে শুধু আমেরিকা নয়, জাপান, অস্ট্রেলিয়াও ভারতের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে নেমে পড়বে। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে ভারত–চিন যুদ্ধ এড়ানো কিন্তু এবার মুশকিল। আমেরিকার শক্তিতে ভরসা করেই যে ভারত যুদ্ধে নামবে, তা কিন্তু নয়। চিনকে মোকাবিলা করতে ভারতের শক্তি কিছু কম নেই। লাদাখে ইতিমধ্যে তিন বাহিনীর ১৫ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে। পার্বত্য এলাকায় ভারতের এই ১৫ হাজার সৈন্যের মোকাবিলায় চিনের অন্তত ৫ লক্ষ সেনা লাগবে বলে মনে করেন সমর বিশেষজ্ঞরা। চিনের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ভারতের অত্যন্ত শক্তিধর ভীষ্ম ট্যাংকও লাদাখে অপেক্ষা করছে। লাদাখ সীমান্তের অবহ চাক্ষুষ করতে সেনাপ্রধান নিজে ঘুরে গিয়েছেন। ফিল্ড কম্যান্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এখন উপরতলা থেকে খালি নির্দেশের অপেক্ষা। ইতিমধ্যেই চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির মোকাবিলায় কত সংখ্যক মার্কিন সেনা এশিয়ায় মোতায়েন করা হবে, সে হিসেব কষতে বসেছে আমেরিকা।
