পাকিস্তানের সঙ্গে যে সাহস দেখিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই সাহস চিনের সঙ্গে দেখাতে পারলেন না। সব দেশভক্তি, ৫৬ ইঞ্চির ছাতি বৈঠকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে রইল। এখন লাদাখে ভারত–চিন সেনার মধ্যে ক্রমশ বেড়ে চলা উত্তাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিল দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আগামী শনিবার ৬ জুন লাদাখ ইস্যুতে ভারত–চিনের মধ্যে সেনা পর্যায়ের বৈঠক হবে বলে খবর। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মুখোমুখি দু’দেশের সেনা। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকেই এই বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাতে সাড়া দিয়েছে চিন। শনিবার সীমান্তের চুশুল মলডো সেনা ছাউনিতে বৈঠক হবে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন ১৪ কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং।
এই পরিস্থিতির মধ্যে প্রায় ২৫ মিনিট ফোনে কথা বললেন মোদী–ট্রাম্প। আলোচনার মূলে ছিল ভারত–চিন সীমান্ত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। এর বেশি কিছু তথ্য এখনও জানানো হয়নি সরকারি তরফে। যদিও ভারত–চিন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শ প্রদানের ঘটনা প্রত্যাশিত। গত সপ্তাহেই ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটে জানান, ‘ভারত–চিন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আমি অবগত। যদি কোনওরকম মধ্যস্থতার প্রয়োজন হয় তবে আমি তা করতে তৈরি আছি।’
অনেকের মতে, ডোকালামের মতো কয়েক মাস ধরে এই সেনা মোতায়েন এবং তার জেরে উত্তেজনার পরিস্থিতি বজায় থাকতে পারে লাদাখ সীমান্তে। এর আগে লাদাখ ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার স্থানীয় স্তরে কথা হয়েছে। কিন্তু কোনও বৈঠকেই ফলপ্রসু কিছু উঠে আসেনি। ১৯৬২ সালে ভারত–চিন যুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে এত গুরুতর সংঘাত আগে দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, মে মাসের গোড়ায় লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনা সেনার তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই নয়াদিল্লি–বেজিং সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দু’দফায় হাতাহাতি সংঘাতের পর গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিপুল সেনা মোতায়েন করে চিন। পাল্টা ভারতও সেনা মোতায়েন করে যোগ্য জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিল। আর তা বাড়তি মাত্রা পায় যখন ট্রাম্প জানান, ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখার দিকে চিনের আগ্রাসন নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত।