প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিন যেভাবে সেনা সমাগম করছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে দু’দেশই পাঁচ দফা পরিকল্পনা বিষয়ে একমত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে বর্তমান দু’দেশের মধ্যে যে সমস্ত চুক্তি ও প্রোটোকল রয়েছে তা দু’পক্ষই অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবে।
সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশনের পার্শ্ববৈঠকে দু’দফায় মুখোমুখি হয়েছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেই বৈঠকেই চিন সেনার এই আগ্রাসী ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। সূত্রের খবর, লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমানো এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সরানোর বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা যাতে বজায় থাকে, দু’দেশই সেই মতো চলবে। উত্তেজনা চড়তে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ করা থেকে দু’পক্ষই নিজেদের বিরত রাখবে বলে সহমত পোষণ করে বৈঠকে। কিন্তু চিন শেষ পর্যন্ত কথা রাখবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বৈঠকে জয়শঙ্কর তাঁর গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন ওয়াং–কে। সীমান্তে এই সংঘাতের সঙ্গে যে ভারত এবং চিনের সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সংযুক্ত হয়ে গিয়েছে, সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি। সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে সীমান্ত থেকে সেনা সরাতে হবে চিনকে—এই বার্তাই দিয়েছে দিল্লি। উল্লেখ্য, ১৫ জুন রাতে গলওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়েছিল। সেই সংঘাতে শহীদ হন ভারতের ২০ বীর সেনা জওয়ান। আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দাবি, ভারতের দ্বিগুণ সংখ্যক চিনের সেনা প্রাণ হারান ওই সংঘর্ষে। যদিও বেজিং সরকারিভাবে নিহত চিন সেনার সংখ্যা ঘোষণা করেনি।
চিনকে ভারতের বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়ে দেয়, ১৯৯৩ আর ১৯৯৬ সালে যে চুক্তি হয়েছিল, তা পুরোপুরি লঙ্ঘন করছে চিন সেনা। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কেন তারা সেনা সমাবেশ করছে, তার সঠিক কারণও বলতে পারেনি চিন। ভারতীয় সেনা গোটা পরিস্থিতিতে যথেষ্ট সংযম দেখিয়ে যাবতীয় নিয়ম পালন করেছে। চিন অবশ্য সহমত পোষণ করলেও কতটা পালন করে সেটাই দেখার।