বঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। গোদের ওপর বিষফোঁড়া ওমিক্রন।কলকাতার পাশাপাশি সংক্রমণ বেড়ে চলেছে সারা বাংলাজুড়ে। এমত পরিস্থিতিতে রাজ্যে ফের কোভিডবিধি চালু হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে কনটেনমেন্ট, মাইক্রো-কনটেনমেন্ট জ়োন চালু করার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
ইতিমধ্যে সোমবার জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বলেন, সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সে জন্য এলাকাভিত্তিক মাইক্রো-কনটেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করতে হবে। পাশাপাশি জেলায় জেলায় মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের ক্ষেত্রে ভিড় নিয়ন্ত্রণে কড়া নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। মুখ্যসচিবের আরও বলেন, যে কোনও মেলা, বই মেলাতে কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক ছাড়া প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অতিরিক্ত ভিড় বা জমায়েত হলেই ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
তথ্য বলছে, গত বছর দুর্গাপুজোর পর থেকেই কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে দৈনিক কোভিড সংক্রমণ। তা রুখতে সক্রিয় হয়েছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। যে সকল এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে, সেখানে গণ্ডিবন্ধ এলাকা তৈরি করে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হচ্ছে। জন সাধারণকে সতর্ক করার পাশাপাশি কোভিড বিধি অমান্যকারীদের গ্রেফতার করে কড়া বার্তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে ওমিক্রন হানা দেওয়ার পরে গত কয়েকদিনে রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। তাই ফের কনটেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যসচিব সমস্ত জেলার জেলাশাসকদের নির্দেশ দিযেছেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখে জেলায় জেলায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বা কনটেনমেন্ট জ়োন চালু করতে হবে। কোনও এলাকায় বা কনটেনমেন্ট জ়োনে চার থেকে পাঁচ জন আক্রান্তের হদিশ মিললেই সেই এলাকাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এইসব এলাকায় কোভিড টেস্ট, কনট্যাক্ট ট্রেসিং বাড়াতে হবে।
কিছুদিন আগেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, যেখানে এক সঙ্গে পাঁচ থেকে ছয় জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাবে, সেই এলাকা কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হবে। বৃহস্পতিবারই কলকাতা পুরনিগমে বৈঠকে বসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ-সহ পুরসভার স্বাস্থ্য কর্তারা। এই বৈঠকেই আলোচনা হয়, সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে আর ঝুঁকি নিতে চাইছে না পুরপ্রশাসন। তাই প্রাথমিক ভাবে শহরের ১৭টি জায়গাকে মাইক্রো-কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সব এলাকায় পাঁচ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে পুরপ্রশাসনের কাছে খবর রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ বলছেন, জাঁকিয়ে শীত সবে পড়তে শুরু করেছে। যদিও তা মানুষকে কাবু করতে না পারলেও করোনা যে মানুষকে একপ্রকার কাবু করেই ফেলেছে করোনার উর্ধমুখী গ্রাফ দেখে তা বলাই যায়।