কথিত আছে, অবিভক্ত বাংলার যশোরের জমিদার বাড়িতে ডাকাতি করতে যায় সাত জন ডাকাতের একটি দল। সম্পর্কে তারা ছিল আপন ভাই। ডাকাতি করে ফেরার পথে কালীঠাকুর বলেছিলেন, “তোরা সব কিছু নিয়ে যাচ্ছিস, আমাকে নিবি না?” এই শুনে ডাকাতের দল কালীঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে আসে। কালী ঠাকুরের নির্দেশমতো বর্তমান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পুরাতন বনগাঁর ইছামতি নদীর ধারে জঙ্গল ঘেরা বটগাছের নীচে স্থাপন করা হয় সেই কালীমূর্তি।
সেই থেকে আজও প্রতি বছর পৌষ মাসের শনি ও মঙ্গলবার সাতভাই কালীতলায় জাঁকজমক করে পুজো হয়৷ ইতিহাসের স্মৃতি আঁকড়ে মায়ের মন্দিরে বংশ পরম্পরায় পূজার্চনা করে আসছেন পুরোহিতরা৷ পুজো শুরু হয় আনুমানিক প্রায় ৪০০ বছর আগে। জাগ্রত পুরাতন বনগাঁর এই কালী মন্দির সাত ভাই কালীতলা নামে পরিচিত।
দূরদূরান্তের বহু মানুষ ভিড় জমান সাতভাই কালীতলায়৷ ইছামতী নদী পেরিয়ে নৌকা করেই মায়ের কাছে আসেন বহু ভক্ত৷ বট গাছে লাল-নীল সুতোয় ঢেলা বেঁধে মানত করেন ভক্তেরা৷ মনোবাসনা পূর্ণ হলেই পুজো দিয়ে ওই গিঁট খুলে দিয়ে যান তাঁরা৷ পৌষ মাসে ভক্ত সমাগমকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। এক মাস ব্যাপী চলে এই মেলা। কী থাকে না সেই মেলায়, বরং সাধারণ আর পাঁচটি মেলার থেকে একটু বেশিই পসরা নিয়ে সেজে ওঠে এই মেলা। পাশাপাশি রয়েছে ইছামতি বক্ষে নৌকা বিহারের উন্মাদনা।
করোনা আবহে গত দুবছর সে রকম ভিড় না হলেও এবছর উপচে পড়ছে ভিড়। মায়ের কাছে আসতে পেরে সীমাহীন আনন্দে মাতোয়ারা ভক্তরা। সঙ্গে রয়েছে ভক্তদের প্রসাদ খাওয়ানোর ধূম। বিশাল মাঠ জুড়ে চলছে রান্না। হাজার হাজার ভক্তরা মায়ের প্রসাদ নিয়ে তবেই ফেরেন বাড়ি।
তবে শুধু পৌষমাস নয় সারা বছরই ভক্তের সমাগম থাকে এই মন্দিরে।