লাইফস্টাইল

যেভাবে কমবে মানসিক চাপ

যোগব্যায়াম মানসিক সুস্থতা, দুশ্চিন্তা, ঘুমের সমস্যা প্রভৃতি কাটাতে সাহায্য করে। এর বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা আজকাল উন্মোচিত হচ্ছে। অনেক ধরনের যোগব্যায়াম এসব ক্ষেত্রে ভালো ফল দেয়। তবে প্রতিদিনের হাজার কাজের ব্যস্ততার মধ্যে ব্যায়ামের সময় বের করা কঠিন। তাই অল্প সময়ের ব্যায়ামে কতটা সুফল পাওয়া যায়, সে বিষয়টির প্রতি বিজ্ঞানীরা মনোযোগী হন।

অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রতিদিন মাত্র চার-পাঁচ মিনিটের সামান্য শ্বাস-প্রশ্বাস (ব্রিদিং) ব্যায়ামে চমৎকার ফল পাওয়া যায়। এ জন্য খুব বেশি প্রস্তুতিও লাগে না। বিছানায় শুয়ে নাক দিয়ে ধীরে ধীরে বুকভরে শ্বাস নিন, পেট ফুলিয়ে দিন। এতে ফুসফুস প্রসারিত হওয়ার বেশি স্থান পাবে। কয়েক সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখুন। এরপর এক…দুই…তিন…পাঁচ পর্যন্ত গুনতে গুনতে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এ রকম চারবার করুন। ব্যস, আপনার স্নায়ুতন্ত্র সুস্থিত হয়ে গেল। এ ব্যায়াম দিনে কয়েকবার করতে পারেন। নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাস শুধু মানসিক চাপই কমায় না, সেই সঙ্গে শরীর সতেজ রাখে ও দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম কীভাবে মানসিক চাপ কমায়, সে বিষয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চলছে। আমরা জানি, স্নায়ুতন্ত্রের স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা হার্টরেট, হজমপ্রক্রিয়া ও মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা, করটিসল হরমন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি কাজ করে। একটি তত্ত্ব অনুযায়ী, ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের ফলে স্নায়ুর স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় এবং মানসিক চাপ প্রশমন সহজ হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের সাধারণ ধারা সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে মস্তিষ্ক বিশেষ সংকেত পায়। তখন সে স্নায়ুমণ্ডলীর প্যারাসিম প্যাথেটিক ব্রাঞ্চকে সমন্বিত করে। এভাবে মানসিক চাপ প্রশমিত হয়। আপনি ধীরে ধীরে ও অবিচলভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করলে মস্তিষ্ক এই সংকেত পায় যে সবকিছু ঠিকঠাক আছে। তাই দুশ্চিন্তা দূর হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আপনি যদি ঠিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম নিয়মিত করেন, তাহলে মন সুস্থিত থাকবে।