জেলা

আবার ভারী বর্ষণের ভ্রুকূটি বাংলায়

আগামী শুক্রবার নাগাদ ফের একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। নিম্নচাপটির অভিমুখ ওড়িশা উপকূলের দিকে থাকলেও তার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূল সংলগ্ন জেলা দুই মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনায় শনিবার থেকে বৃষ্টির মাত্রা বাড়বে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। রবিবার ও সোমবার কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম প্রভৃতি জেলার বেশিরভাগ জায়গায় বৃষ্টি হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দু’দিন ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। সব মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গে দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপের জেরে এমনিতেই দুই মেদিনীপুর সহ কয়েকটি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ইতিমধ্যেই বন্যাপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় ফের দক্ষিণবঙ্গে ফের ভারী বর্ষণের আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বুধবার জেলাপ্রশাসনগুলিকে সতর্ক করেছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে এদিন নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব।

৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ও মুর্শিদাবাদের দুটি বিধানসভার নির্বাচন আছে। জল জমার ফলে যাতে ভোটে কোনও বিঘ্ন না হয় তার জন্য‌ কলকাতার পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার ও মুর্শিদাবাদের জেলাশাসককে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। ভবানীপুর এলাকায় কিছু নিচু জায়গায় জল জমে। সেখানে বিশেষ নজর রাখতে কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এনডিআরএফ-কে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

নবান্ন থেকে বৈঠকে মুখ্যসচিব দক্ষিণবঙ্গের জেলাশাসকদের আরও ত্রাণশিবির খোলা, নদী-সমুদ্রের তীর থেকে মানুষকে আগাম নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দুর্যোগে যাতে কোনও মৃত্যু না হয় সেটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ত্রাণশিবিরগুলিতে পর্যাপ্ত খাদ্য, ওষুধ, প্রভৃতি আগাম মজুত রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানিয়েছেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় কলকাতায় বৃষ্টির মেঘ সঞ্চার হয়। দখিনা বাতাস বঙ্গোপসাগর থেকে বেশি পরিমাণে জলীয় বাষ্প নিয়ে আসছে। নিম্নচাপের সঙ্গে থাকা নিম্নচাপ অক্ষরেখা ও মৌসুমি অক্ষরেখার উপস্থিতি দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি করেছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মায়ানমার উপকূল ও সংলগ্ন মারতাবান উপকূলে ইতিমধ্যে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এটি উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পূর্ব ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে আসবে। আগামী শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ এটি শক্তি বৃদ্ধি করে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এই নিম্নচাপটি ওড়িশা উপকূলের দিকে এগবে। নিম্নচাপজনিত দু্র্যোগের জেরে দক্ষিণবঙ্গে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি, নিচু এলাকা জলমগ্ন হওয়া এবং মাঠে থাকা ফসলের ক্ষতির সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর।