স্বাস্থ্য

হিট স্ট্রোক

তাপমাত্রা বাড়ছে। বাতাসের আর্দ্রতার মাত্রাও বাড়তে শুরু করেছে। গরমে যেকোনো সময় হয়ে যেতে পারে হিট স্ট্রোক। কয়েকটি জরুরি সতর্কতা মেনে চললে এড়াতে পারবেন এই হিট স্ট্রোক।

কেন হয় হিট স্ট্রোক
শরীরের তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকেই বলা হয় হিট স্ট্রোক। আমাদের শরীরের ভেতরে নানা রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে সব সময় তাপ সৃষ্টি হতে থাকে। সেই তাপ আবার ঘামের সাহায্যে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার মধ্যে একটানা কাজ করলে শরীরের তাপমাত্রা বাইরে ছড়িয়ে পড়তে পারে না। জল কম খাওয়ার জন্য যদি শরীরে জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হয় সেক্ষেত্রে হতে পারে হিট স্ট্রোক। হিট স্ট্রোক হলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসা প্রয়োজন। বয়স্কদের, বাচ্চাদের এবং যারা অতিরিক্ত মোটা তাদের হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বেশি।

লক্ষণ
অনেকটা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণের সঙ্গে মিলে যায় হিট স্ট্রোকের। হিট স্ট্রোকের লক্ষণ শরীরে দেখা দিলেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই ভালো। সাধারণ লক্ষণগুলো এমন-
১। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া।
২। পালস দ্রুত হয়ে যাওয়া এবং হার্ট বিট বেড়ে যাওয়া।
৩। ঘাম কমে যাওয়া বা একেবারেই ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া।
৪। ত্বক লাল হয়ে শুষ্ক হয়ে যাওয়া।
৫। শরীর ক্লান্ত লাগা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব।
৬। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা লাগা।
৭। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
৮। অস্বাভাবিক জিনিস দেখা বা হ্যালুসিনেশন হওয়া।

প্রাথমিক চিকিৎসা
১। প্রথমেই রোগীকে ঘরের ভিতরে কোনো ঠান্ডা জায়গায় এনে শুইয়ে দিন।
২। জামার বোতাম খুলে দিন যাতে শরীরে বাতাস লাগে। ভারী জামাকাপড় পরা থাকলে তা বদলে হালকা কাপড় পরান।
৩। ঘরে ফুল স্পিডে ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার চালিয়ে দিন। কাপড় ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে ঘরের পরদার ওপর দিয়ে দিন।
৪। কপাল, মুখ ও ঘাড়ে জলপট্টি দিন। মুখ, গলায় জলের ছিটে দিন বা ১৫-২০ মিনিট পর পর স্প্রেয়ার দিয়ে জল স্প্রে করুন।
৫। ঠান্ডা জলে নুন, চিনি দিয়ে শরবত বানিয়ে রোগীকে বার বার খাওয়াতে থাকুন।
৬। ক্রমাগত শরীরের তাপমাত্রা মনিটর করুন।
৭। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

সতর্কতা
১। যাদের ঘর থেকে বাইরে বেরুতে হয়, তারা চেষ্টা করুন সকালের দিকে বেরিয়ে পড়ার। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদ না লাগানোর চেষ্টা করুন।
২। চা, কফি পারতপক্ষে খাবেন না। এগুলো শরীরে জলশূন্যতা ঘটায়।
৩। ঘর থেকে বেরুনোর আগে ৩-৪ গ্লাস জল পান করুন। সঙ্গে জলের বোতল রাখুন। বাইরে গিয়ে    ১৫-২০ মিনিট অন্তর অন্তর জল পান করুন।
৪। রোদের মধ্যে বেশি হাঁটাহাঁটি করবেন না।
৫। হালকা রঙের সুতির ঢিলে জামা-কাপড় পরুন।
৬। দুবার স্নান করুন। মাঝে মাঝে রুমাল বা তোয়ালে দিয়ে মুখ, ঘাড়, গলা ভালো করে মুছে ফেলুন।