অবশেষে হাথরাস ঘটনার তদন্তভার উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাত থেকে গেল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা তথা সিবিআইয়ের হাতে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করেছিলেন, সিবিআইয়ের হাতে চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণ মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে। তার প্রেক্ষিতেই শনিবার এই মর্মে একটি নোটিফিকেশন জারি করে কেন্দ্র। নোটিফিকেশনে বলা হয়েছে, হাথরাস মামলায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দায়ের করা এফআইআর নতুন করে নথিভুক্ত করবে সিবিআই। তার পরেই তদন্তের কাজ শুরু হবে। রবিবার সকালে হাথরাস কাণ্ডের তদন্ত হাতে নেয় সিবিআই।
গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। তারা বলেছিল, বাঁকা উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও কায়েমি স্বার্থ যাতে জাল এবং মিথ্যা গল্প ফাঁদতে না পারে, সে ব্যাপারটা সুনিশ্চিত করবে রাজ্য সরকার। হাথরসের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করার জন্য রাজ্য সরকার বিশেষ তদন্তকারী দলও (সিট) গঠন করে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯ বছরের এক দলিত তরুণীকে তাঁর গ্রামের চারজন গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। মারাত্মকভাবে জখম হওয়ার দরুন দু’সপ্তাহ পরে তিনি মারা যান। এই ঘটনার সঙ্গে ২০১২ সালের নির্ভয়া ধর্ষণের মিল খুঁজে পায় সাধারণ মানুষ এবং দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
শনিবার উত্তরপ্রদেশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অবনীশ কুমার অবস্থি ও ডিজিপি হীতেশ চন্দ্র অবস্থি নির্যাতিতা দলিত তরুণীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। সিবিআইয়ের হাতে মামলা হস্তান্তরের কথা জানিয়ে আসেন। যোগী আদিত্যনাথ নিজেও ট্যুইট করে জানিয়ে দেন, হাথরসের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। যদিও পুলিশ দাবি করেছিল, কোনও ধর্ষণ হয়নি এবং ফরেনসিক রিপোর্ট দেখিয়ে বলে তরুণীর শরীরে কোনও বীর্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা পুলিশের এই দাবি মানতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, আক্রমণের ১১ দিন ওই তরুণীর শরীর থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্তরা উচ্চবর্ণের হওয়ায় পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে নানা মহল থেকে অভিযোগ তোলা হয়। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতাদেরও কেউ কেউ ধর্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের নির্দোষ হিসেবে দাবি করতে থাকেন। ফলে দেশজুড়ে হাথরসের ঘটনা নিয়ে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। এখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে তদন্তে আদৌ নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে কি না, তা নিয়ে নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে।
